Tuesday 26 February 2019

ইলিউশন

ইলিউশন
ইমেল নাঈম

ভুলে যাই নি ব্যাকরণের প্রথম পাঠ। শিখেছিলাম গাছের সালোকসংশ্লেষণজুড়ে থাকে মৌন এক উপলব্ধি। গ্লোবাল ওয়ার্মিং গিলে খাচ্ছে তার পুরোটাভাগ। বিনিদ্র সময় লিখে রাখছে একাকিত্বের কিছু মেঘ প্রহর। দিন পেরিয়ে গেছে, হাতেখড়িতে ক্লান্ত সময় যাপন আজো গেয়ে যায় পুরোনো গান।

ভুলে যাওয়া যাপন— মানচিত্রে ভিন্নধর্মী গান... বখে যাওয়া মানুষের কণ্ঠে বকাটে পাখির আর্তনাদ লিখে রাখো জীবনের সব চোরাবালি। মুছে ফেলো— মিথ্যে আবরণে ঢেকে রেখো না চোখ। কিছু দৃশ্যপট চুপিসারে বলে যায়— মেঘের কাছে হেরে যাওয়ার গল্প ঠিক অন্যরকম। পোস্টমডার্ন ছায়া অথচ প্রাচীণ গোত্রীয় এক ঘোড়া টেনে নিয়ে যাচ্ছে মায়ার কলস।

মুখ মুছে গেছে। ভুলের বৃত্তে আটকে গেছে। দিনের হিস্যা নিয়ে অচেনা এক পথচারী। গল্পের ভাঁজে শুকনো ফুলের পাপড়ি। অপঠিত অধ্যায়ের অনেক গল্প আমাদের পঠিত নয়। কথা ছিলো, তোমায় অভিবাদন জানাবে পথে ছড়ানো জেসমিন। অথচ, দিনশেষে বুঝলে কেউ কখনো কারো কাছে আসে না।

আমাদের দেহমন্ত্র মুছে গেছে। বৃক্ষরা মৃত। নগণ্য জীবন শুধু থমকে যায়। হাতের ভাঁজে কাল্পনিক কিছু সময়যাপন। ভুলের ব্যাসার্ধে উত্তরপত্র শূন্যতায় ঠাসা। মৌন সময়গুলো উত্তরহীন, উত্তাপহীন কিছু মুহূর্তকে এঁকে যাচ্ছে চোরাবালির টানে।

Sunday 24 February 2019

ধারাপাত

ধারাপাত
ইমেল নাঈম

ভাষারা মলিন হবে। রুক্ষতা এঁকে দিবে প্রলোভন। জীবনের পলেস্তারা খসছে। অনুভব করছি অন্যরকমের মায়ার জীবন। দূরের দ্বীপ বিচ্ছিন্নতার গান গাইতে গাইতে থেমে গেছে। জীবনের আয়োজন থেমে যাওয়া বাঁশীর সুর, যা গাইছে শুধু নির্জনতার সংগীত।

দেয়ালে ঝুলছে। নিজের জন্য অবশিষ্ট নেই কোনো কিছুই। প্রান্তিক জীবন কৃষক শ্রমে সমূলে উৎপাটন করছি ভালোবাসা। বৃক্ষের মতো হত্যাকে লিখছি। নিজেদের নিয়ে হারিয়ে ফেলেছি ভালোবাসার নীল চাদর। শিকড়হীন গাছের শিকড়ত্ব আকঁতে ক্লান্ত হচ্ছি খুব।

মায়াময় সময়, নিজের কাছে রেখে দিচ্ছি বখে যাওয়া সময়। কতটা দূরে সরে যেতে পারি। হিসেবে রাখি নি প্রত্যাখ্যান সমগ্রের দুঃখবিলাস। নিজের জন্য রেখে দিয়েছি ইরানি জাফরান, যার ঘ্রাণে লিখে রাখছো ভালোবাসার সকল ছোবল।

চুপিসারে পালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘশ্বাস। অনুভবে মুছে যাচ্ছে বুকের ভেজা অংশ। ক্লান্ত চোখের পাতাজুড়ে ব্যথা, দীর্ঘশ্বাস এঁকেবেঁকে চলে গেছে রূপকথার নদীর মতো। নিজেকে নিয়ে ভাসিয়ে দিচ্ছি তারই বিষাক্ত জলে। জীবন পুড়ে যাওয়া মানচিত্রের মতো, ভুগোল শিক্ষক হয়ে যায়... আর বারবার বলে এভাবে নয়, ওভাবেও নয়...।

আসলে কোনোভাবেই কী নয়...!

Friday 22 February 2019

বিক্রয় মূল্য

বিক্রয় মূল্য
ইমেল নাঈম

ঢেকে যাচ্ছে দূরের আলাপন। মেঘ ছুঁয়ে যাচ্ছে ভ্রান্তিকাল।
মুহূর্ত মুছে যাচ্ছে, নিয়ে যাচ্ছে অহেতুক কালিমা—
পথ এঁকে নিচ্ছে নির্বাক সময়ের নির্যাস—
হাতের রেখায় মুছে যাচ্ছে প্রান্তিক আলাপের দুঃখ।

ছুঁয়ে দেখছি নিজের জন্য রাখা সময়গুলোকে
ভুলো মন ভুলিয়ে দিচ্ছে, হারিয়ে ফেলছি নিজেকে।
ক্রোধের সংজ্ঞায় রেখে দিচ্ছি নীরবতার ভাষা...।
ক্রান্তিকালে লিখে রাখছি জীবনের কিছু আয়োজন

মুছে যাচ্ছে জীবনের দিনপঞ্জি, গৎবাঁধা রুটিনের
ফাঁকে অশ্রুজলে ভিজিয়ে নিচ্ছি দিনের ক্লান্তি
থাকুক কিছু সময়— কথারাও বিমূর্ত হয় শুধু—
জীবন আঁকড়ে ধরছি, বিনিমিয়ে অপ্রাপ্তির খাতা
ভর্তি হচ্ছে মহাকালের নামে, মূর্খমুখ মূক নই।

বধিরতা কেটে যাচ্ছে— নিয়ে যাচ্ছে দূরের পথে
নিজেকে নিয়ে আয়োজনগুলো ক্রমাগত ব্যর্থ হয়
মূর্ছনা থেমে যাক— ঢাকবো নিজেকে কালো কাপড়ে...

মুহূর্তে, বিমূর্ত আলাপনে টিকে থাকে কাহিনির শেষে
আবরণে ঢেকে থাকে অচেনা প্রচ্ছায়া, নিজেকে ফেরি
করছি, বেচে দিচ্ছি চোখের জলে, গায়ে ক্রয়মূল্য লেখা—
যেন অপ্রাপ্তির জীবন তাড়া করে পলাতক আসামি...

Wednesday 6 February 2019

বর্ণমালা

বর্ণমালা
ইমেল নাঈম

একদিন থেমে যাবে সকল আয়োজন
মানুষগুলো বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে
থাকবে সাড়াহীন, অথচ নিঃশব্দের তীব্রতাও
মাপা হয় নি আজতক, মেঘের ভাষা পড়তে
বসে হারিয়ে ফেলছি পৃথিবীর সব আয়োজন।

ভাষার প্রতিশব্দে কিছুই বাকী নেই আর,
দিনের অংকে বর্ণমালায় কেবলই হাহাকার
চুপচাপ ঝরে যাবে পাহাড়ি ফুল, বুনো ঘ্রাণে
আচমকা নেমে আসবে ঘন মহুলার বন,

নীরবতার ভাষা পড়ছি প্রতিটি মুহূর্তেই
মিলিয়ে যাচ্ছে জীবনের প্রতিটি আয়োজন
দায়বদ্ধতার ফাঁকে হেসে ওঠে কবিতার খাতা
অক্ষরবৃত্ত, স্বরবৃত্ত, মাত্রাবৃত্তের মাঝেও
হাসে দুঃখিনী বর্ণমালা, চিহ্ন আঁকছি শুধু...

কোথাও কোনো সংকেত নেই, মৌন সবকিছু
ভাগ করে নিচ্ছি অনুভব, অনুভাব; নিজের
জন্য নেই বাক্যের ফোয়ারা, আনন্দের ঝর্ণায়
ভাসিয়ে নিচ্ছে জীবনের মায়াভরা উপলক্ষ

উপলব্ধি করতে করতে বুঝে নিচ্ছি সৌন্দর্য
মেঘের ভাজে উড়ছে স্বর, মূর্ছনায় রাখছি
অস্তিত্ব, বর্ণমালার কাছেই লিপিবদ্ধ সব ঋণ।