Saturday 31 December 2016

বর্ষ বিদায়

বর্ষ বিদায়
— ইমেল নাঈম

কিছু প্রশ্ন থাকে। স্পর্শের বাইরে রাখও সবটুকু সুর।
অংকের মতো উড়ে যায় আমাদের গ্রেগরীয় সুর্য
বিউগল থেমে যাক, পৌষের কুয়াশা বিদীর্ণ করে
ফেলে আমার অনানুষ্ঠানিক প্রণয়। পরিচয়টুকু
আড়াল করতে করতে মুছে ফেলেছি অতীত জীবন।

প্রহসনের শেষপ্রান্তের কিছু গল্প কবিতা বলি নি
সূর্যাস্তের মন্ত্রটুকুও মুছে যাচ্ছে আগুনের ফুলকিতে
অমা নামুক। জ্বালিয়ে দিবো লাকড়ি, উত্তাপ বাড়লে
বেসুরো গলায় গান গাইবো, পূর্ণিমা নেই। ঝিঁঝির
সান্নিধ্যের মুগ্ধতাটুকু মুছে যাবে খানিকবাদেই।

এখানে বারো জন। কেউ কাউকে চিনিনা, জানিনা।
কারো কাছেই প্রত্যাশা নেই, বলারও নেই কাউকে
আমি একাই এসেছিলাম। এসেই দেখি বর্ষ বিদায়ের
আয়োজন। কেনো জানি পিছনে ফিরে তাকাই,

নস্টালজিক সময়ের পদধ্বনি গুনতে থাকি
হিসাব করি ফেলে আসা আনন্দ বেদনাগুলোর
হিসাবে বেরোয় — কোথাও বাজে বিচ্ছেদের সুর,
আবার দূরে হাসছে প্রাপ্তির নির্মল আনন্দ

খানিক বাদেই নাড়বে কড়া নতুন হিসাবের খাতা
এখন অনুমানের খাতায় লিখছি মঙ্গল আর মঙ্গল।

Tuesday 27 December 2016

নীরবতার মাইমোগ্রাফ

নীরবতার মাইমোগ্রাফ
ইমেল নাইম

থেমে যাক কলমের বর্ণমালা, মঙ্গলকে পুড়িয়ে দাও অসময়ে
দূর থেকে তাকিয়ে দেখো , অতি সহজে বুঝতে পারবে
একটা বটবৃক্ষ কীভাবে আগাছা পরিণত হয় প্রক্রিয়াধীন পন্থায়

বুকের বাঁ পাশে তিল খুঁজো না প্রিয়তমা, অন্যভাবে দেখো!
এখন অনুরণনে কাঁপেনা মহারথী, কণ্ঠস্বর শুনিনা দৃপ্ত চেতনার।
পরীক্ষানিরীক্ষার ফলাফলে যাই আসে তার পুরোটাই নড়বড়ে

নির্ভুল ভাবে পুরণ করলে নেমে আসতে হিমালয়ের নীরবতা
জ্বলন্ত মোমবাতি বন্ধ হয়ে যেতে পারে দক্ষিণের বারান্দায়,
বিষম রেখায় ক্রমাগত হাহাকারের রোল ঢেকে যাবে উৎসবে

মাইম শিল্পীর মতো মূকাভিনয় করছি, গায়ের আঘাতেও রা নেই
আক্রান্তের অঙ্গভঙ্গিমা বোঝেনা পাশের লোকজন, তারাও
একদিন মূকাভিনেতায় পরিণত হবেন দীর্ঘ, ইন্দ্রজালিক মায়ায়

Tuesday 20 December 2016

অসময়ের অর্কেস্ট্রা

অসময়ের অর্কেস্ট্রা
— ইমেল নাঈম

ছিঁড়ে ফেলেছি গত প্রণয়ের সব কবিতা,
নব জন্মে কী অধিকারে তাকে ছুঁই!
প্রান্তিক বুকে বিটোফেনের অর্কেস্ট্রা
কে আঁকছে অসময়ে অবহেলিত সুর...

জানোই তো নদীর পাশে প্রেমিকেরা একা
নিঃসঙ্গ মাছরাঙাও দেয় সন্ন্যাস জীবনের ডাক
অনুভূতিরা ভোর আসলে নীরব হয়ে যায়,
তোমার কাছে এসে থমকে যায় সব অধিকার ।

বলিনি অনেক কিছুই, অনেক প্রশ্নের
সোজা সাপটা উত্তর দিতে বাধা দেয় মন।
অবসরের নীরবতাকে জলরঙে
সাজাতে চাইলে জ্বলে ওঠে সাঁঝবাতি

আর কোনো কথা নেই, কোমল রাত
উপভোগ করতে গিয়ে দেখবে কেটে গেছে
সুর-তাল- লয়...আহা! বিমুগ্ধতা আর কতো
মোহিত করবে আশ্চর্য প্রদীপ জ্বেলে...

অসময়ের অর্কেস্ট্রা

অসময়ের অর্কেস্ট্রা
ইমেল নাঈম


ছিঁড়ে ফেলেছি গত প্রণয়ের সব কবিতা,
নব জন্মে কী অধিকারে তাকে ছুঁই
প্রান্তিক বুকে বিটোফেনের অর্কেস্ট্রা
কে আঁকছে অসময়ে অবহেলিত সুর

জানোই তো নদীর পাশে প্রেমিকরা একা
মাছরাঙা দেয় সন্ন্যাস জীবনের ডাক
ভোর দেখে মুখ আটকে দেয় সব
তোমার কাছে এসে থমকে যায় অধিকার ।

বলিনি অনেক কিছুই, অনেক প্রশ্নের
সোজা সাপটা উত্তর দিতে বাধা দেয় মন।
অবসরের নীরবতাকে জলরঙে
সাজাতে চাইলে জ্বলে ওঠে সাঁঝবাতি

আর কোনো কথা নেই, কোমল রাত
উপভোগ করতে গিয়ে দেখবে কেটে গেছে
সুর-তাল- লয়...আহা! বিমুগ্ধতা আর কতো
মোহিত করবে আশ্চর্য প্রদীপ জ্বেলে...

Sunday 18 December 2016

প্রশ্নবোধক

প্রশ্নবোধক
ইমেল নাঈম

পরিচয়হীন সম্পর্ক। কেউ কারো নই। অথচ কী টান!
কেউ কাউকে চিনিনা, জানিনা... এমনকি দেখিও নি
কলমের আঁচড়ের জানাশোনা, এটুকু চিনি আপনাকে

একপেশে কথোপকথন, শ্রোতা নেই, তবুও টের পাই
প্রাচীন এক ঢেউয়ের গর্জন, কোনো চাঁপা কান্নার রোল

হয়তো এটি বাংলায় নয়তো হারিয়ে যাওয়া সভ্যতায়...
পাললিক শিল্পের আগুন ঝড়ানো কারুকার্যে
টের পাই কারো নীরব কান্না, অপমানের লজ্জা

আমি চিনিনা আপনাকে, আপনিও চেনেন না আমায়
বইয়ের পাতায় লিপিবদ্ধ এক ফর্মায় উঠে আসছিলো
নখের আঁচড়ে ক্ষতবিক্ষত মাংস পিণ্ড, আর দু'বেলা
আহারের হিসাব নিকাশ। পালিয়ে যাবার আগেও
ছুঁয়ে দেখেছিলো যে পুরুষ, সে কী সত্যি পুরুষ ছিলো?

ওদের পালাবার পর, পালিয়ে গেলেন আপনি...
আপনাকে আর দেখিনি এইপাড়ায়, আশেপাশে
আপনি হারিয়ে গেলেন, আর আঁকলেন প্রশ্নবোধক।

তার উত্তর দিতে গিয়ে খসে পড়লো এই মুখোশ...

Tuesday 13 December 2016

অমীমাংসিত গল্প

অমীমাংসিত গল্প
ইমেল নাঈম

একটা পথ অনুমান নির্ভর অনেক গল্পের জন্ম দেয়
কল্পনাবিলাসী চোখ আঁকতে থাকে স্বপ্নের ক্যানভাস
উড়ুউড়ু মন জানেনা, কোন বন্দরে ফেলেছে নোঙ্গর?
হাপিত্যেশ বাঁচে অন্তর্নিহিত শব্দের ঘোরে, জ্বরের
প্রলাপ আঁকতে আঁকতে ঘুমিয়ে গেছে শীতের শুরু।

কুঝিকঝিক শব্দে ট্রেন চলে যায় দূরান্তের পথ ধরে,
এইপথ আমার চেনা, গন্তব্যটুকু নয়। তুমিও অচেনা...
দূরের যাত্রাপথে ঘোরলাগা অনেক কাহিনী লুকানো
এসবে পাত্তা না দিয়ে সামনের পথে আগানো মঙ্গল
অযথাই ভাবনাযজ্ঞে অসংখ্য চিন্তা মাথাচাড়া দেয়।

কবিতা লিখার সময় নয়, মুঠোফোনে ভেসে আসে
অচেনা কোনো সুর, সেখানেই বুনতে থাকি মায়া,
যাত্রাপথের বিরতি আছে, চোখের নেই বিরতিহীন
পরীক্ষা করে নিচ্ছে দূরত্ব, এটি মধ্যবিত্ত টানাপোড়ন
এই কবিতারা সাধারণত প্রেম নয়, জন্ম দেয় দূরত্ব।

এরইমাঝে গল্পের শেষটুকু গন্তব্য আসলে জানায়
পথ বাড়ো পথিক, প্রেমিক হওয়া তোমার কাজ নয়...

Sunday 11 December 2016

সমীকরণ

সমীকরণ
— ইমেল নাঈম

আংশিক অনুমান করি। ইচ্ছেরা আজ অচেনা...
রেখা আঁকা শেষ হলে বুঝি পেরিয়ে গেলো বছর
রেখায় পা রাখতে বুঝলাম — পথে নামা সোজা না
বিন্দু আঁকছি। রেখা গড়ছো। দৃষ্টির আড়ালে মুখ।

সমীকরণের মতো সরল, বদমাশ ফর্মুলা
মানতেই হবে... না মানার পরিণাম জানা নেই
হতে পারে শুরু আবার এখানেই হতে পারে শেষ
সূত্র মিলিয়ে সমাধান মানে আনন্দের ফোয়ারা

পথিকের গল্প মিললে উড়ে যায় গল্প ও কথা
ফিনিক্স পাখির মতো নবজন্ম আঁকছি, ক্রমশ
রাত ফুরোলে পৌরাণিক কাহিনীর সমাপ্তি হয়
অনেকটা বিন্দু থেকে রেখার অসমাপ্ত বর্ণন

হিসাব মিললে আমি নতুন সমীকরণ লিখি
তোমার স্বার্থ + আমার স্বার্থ = ভালোবাসার সম্পর্ক
সমীকরণ মেনে নিয়ে চলছে অভিনয় পর্ব...

Wednesday 7 December 2016

বৃত্ত বা ত্রিভুজের সমাপ্তি

বৃত্ত বা ত্রিভুজের সমাপ্তি
ইমেল নাঈম

১।

আমাকে ঘিরে আছে ব্যাসার্ধ, কেন্দ্র মেনে
পরিভ্রমণ হলেই জন্ম নিতে পারে বৃত্তের
শৈশবের অংক'র মতো আয়নার প্রতিবিম্বে
ভেসে আসে বেসুরো সুর। স্পর্শক আঁকছি
আঁকতে আঁকতে ছেদকের জন্ম দিবো

২।

দুটো রেখাকে ভাঙছি বিন্দু দিয়ে
ভাঙলে একের যায়গায় দুটো হয়,
বৃত্তের কেন্দ্র ছুঁলে জন্মায় ব্যাস
আমি তাকেই প্রেম ভেবে ভুল করি

৩।

বৃত্তের ভিতরে ত্রিভুজ আঁকি
কেন্দ্র থেকে তুমি নির্দেশক
মাঝে মধ্যমা এঁকে দিচ্ছো
আমি তাকে পরকীয়া ভেবে
ইরেজারে মুছতে চাইছি বৃত্তকে

৪।

বৃত্ত মুছলে সম্পর্কের কিছুই বাকী থাকেনা
সমবাহু ত্রিভুজটিও বিষম আকারে সাজে
অতিকষ্টে আঁকা ছেদকটিকে কে যেনো
আড়ালে পরিমার্জন করছে প্রেমের নামে।

Tuesday 6 December 2016

মৃত্যুসংবাদ

মৃত্যু সংবাদ
— ইমেল নাঈম
(উৎসর্গঃ মাহবুবুল হক শাকিল)

প্রতিদিন ডায়রির পাতায় লিখে রাখি মৃত্যুসংবাদ
একই জংশন ধরে ছুটে চলেছি সামনের স্টেশনে
অথচ আমরা কেউ কাউকে ঠিকঠাক চিনিনা।

গন্তব্য এসে গেলেই হারিয়ে যায় অনেক মুখ,
তাদের ঘিরে থাকে মনখারাপের সাময়িক অভ্যাস
আবার সেসব জায়গা পূর্ণ করতে ওঠে নতুন যাত্রী
আমরা নতুনদের পেয়ে ক্রমশ শোক কাটিয়ে উঠি

খুব রহস্যময় যাত্রা, থেমে যাওয়ার কোনো চিহ্ন নেই
নেই কোনো নির্দিষ্ট স্টেশন, পুরো যাত্রাপথজুড়েই
নেমে যায় যাত্রী, পূর্ণও হয়... একদিন আসবে
আমার পালা আর আমি সেটিই কবিতায় লিখছি

গন্তব্য এলে বুঝি দেখা হবে হারানো যাত্রীদের সাথে
এমন ভাবতে ভাবতে লিখে ফেলছি প্রেমিকাকে
নিয়ে অনেক কবিতা, লিখে নিচ্ছি কষ্ট, দুঃখ, ক্ষোভ
সহযাত্রীরা আমাকে কবি ভাবছে, ঈর্ষাও করছে।

গন্তব্য আসলে আমিও নামবো পূর্বতনের মতো
অথচ আমি একটি সফল কবিতার দিকে তাকিয়ে
কেউ জানেনা ডায়রির পাতায় লিখছি মৃত্যুসংবাদ।

Sunday 4 December 2016

প্রাপক, তোমাকে

প্রাপক, তোমাকে
— ইমেল নাঈম

এক চিলতে আকাশ ধরে রাখছি। আসলে, আজ আমার বলে কোনো শব্দ নেই। হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে গত সন্ধ্যায়। প্রেম জিনিসটা এমন কেন? কোনোকিছুই আমার নয়, সবকিছু আমাদের হয়ে যায়। নিজেকে গুছিয়ে উঠিনি কোনোদিন, অন্যকে গোছানোর স্বপ্নও দেখিনা। ভাবিনি টুপ করে প্রেমে পড়ে যাবো, ভাবতাম এ কেবল সিনেমার  কোনো দৃশ্য, কিংবা উপন্যাসের কোনো টানটান দৃশ্যপট। যেদিন তোমায় দেখি, কলেজ ক্যাফেটেরিয়া, একটা ম্যাড়ম্যাড়ে সকাল। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় কাটিয়ে দেয়া সাধারণ দিনের মতো। আমি সেকেন্ড ইয়ার আর তুমি কিসে পড়ো জানতামই না। হা করে তাকিয়ে থাকা দেখতে না দেখতে বন্ধুদের টিটকারি কানে ভেসে এলো।

চোখ নামিয়ে নিলাম খুব কষ্টে, তোমার তৃতীয় চোখ সে কি বুঝেছিলো এই দৃষ্টিপাত। এরপর খবর নেয়া, একে একে বেরিয়ে এলো তোমার সম্পর্কে। তুমিও কিভাবে যেনো জেনে ফেলেছিলে আমার সম্পর্কে। কলেজ লাইব্রেরি থেকে শুরু করে ক্যাম্পাসের বাকি সময় তোমায় অনুসরণ করতে করতে আবিষ্কার করলাম নিজেকে একটা বন্ধুহীন মানুষ হিসেবে। এও কী সম্ভব! আমি বন্ধুদের আড্ডা বাদ দিয়ে এভাবে পিছুপিছু ঘুরঘুর করছি।

এর মধ্যে উড়ু খবর এসেই গেলো.... কিছুটা পজিটিভ আবার কিছুটা নেগেটিভ। সবচেয়ে অদ্ভুত লাগলো, তুমি নাকি এমন বলেছো, আমি ভীতু তাই তোমার সামনে এসে দাঁড়াতে পারিনি। বিশ্বাস করবে এই লাইনটির জন্যই আমি অপেক্ষা করেছিলাম এতোটা সময়। সেই মুহূর্তে মনে মনে ঠিক করে ফেললাম দেখা করি। দেখা হোক প্রিয় ক্যাম্পাসে।

পরের দিন নাম ধরে ডাক দিতে তোমাকে ক্যামন যেনো নার্ভাস লাগছিলো। ভিতর টা আমারও অল্পস্বল্প কাঁপছিলো, এটা কী ট্যালিপ্যাথি! হতেও পারে হয়তো। নাহ, তোমার আর আমার আড়ষ্টতা কাটতে সময় লাগেনি বেশিক্ষণ। এরপর অনেক আড্ডায় এগিয়ে গেলো সময়। আড্ডা শেষে বুঝলাম একটা বন্ধুত্ব কেবলমাত্র জন্ম নিলো। এই বন্ধুত্বই প্রেমের প্রথম ধাপ, তা হয়তো তুমি জানো, হয়তো জানোই না।

এরপর কথা হওয়া শুরু, মানে ম্যাসেঞ্জারে আর হোয়াটসঅ্যাপে। এটি আরো চার/পাঁচ বছর আগের কথা, তখন কলিং অপশন ছিলোনা সামাজিক মাধ্যমে, এখনকার প্রেমিক যুগল এইদিক দিয়ে খুব ভাগ্যবান। চাইলেই কথা বলতে পারে, ইচ্ছে হলে মুখটিও দেখতে পারে। আমাদের আলাপন তখনও চলছে মহাসমারোহে। একদিন তুমি হঠাৎ করে বললে কেনো এতো খবর নেই তোমার। শুনে খারাপ লেগেছিলো, সত্যি তুমি বুঝোনি, নাকি বুঝতে চাও নি। পরমুহূর্তে বললে দেখা করতে, কেইবা জানতো সেই দেখাটি একটা বন্ধুত্বের মৃত্যু হবে আর সৃষ্টি হবে নতুন অধ্যায়ের।

যদিও আমার চোখে তুমি এখনো একজন ভালো বন্ধু।

ইতি,
তোমার বন্ধু

পাপ মোচন

পাপ মোচন
— ইমেল নাঈম


সীমানাটুকু খুব চেনা। আকাশের ওপার টা দেখা হয় নি আজও, যেমনটা দেখিনি মাটির নিচ। ঈশ্বরকে চিনিনা অথচ স্বর্গ নরকের দ্বন্দ্ব কাঁপিয়ে দেয় ভিতরের দিক। শৈশবের ধারাপাত খসে পড়ে অবহেলায়। সমাজ টেনে নিয়ে যায় অন্ধকারের পথে। সেও রাক্ষসের মতো খেয়ে ফেলছে মানবিকতা।  অন্ধকারের দিকে যেতে যেতে আবিষ্কার করি, টাকাই পৃথিবীর অলিখিত এক ঈশ্বর।

প্রমাণস্বরূপ, মোহর ফেললেই আয়োজন হয়ে যায় প্রার্থনা পাঠের। প্রতিনিধি এসে গেয়ে যান স্রষ্টার স্তুতি। মোনাজাত আর আমিন শব্দে কতটা কালো পরিষ্কার হয়? জানা নেই। সাপ্তাহিক হাজিরায় নাম লিখে রাখি নিজের। আমার মতো অনেকেই আছে। শেষ কাতারের মুখ। মুখোশটা আল্লাহ চেনেন। প্রতিবেশী নন।

তারুণ্য চলে যায় আরবিয় ঘোড়ায় চড়ে। আমি দৌড়তে দৌড়তে হারিয়ে ফেলি নিজের কক্ষপথ। বুঝতে পারি শরীরের কলকব্জা প্রায় শেষের পথে। পথ খুঁজতেই দেখি ভুল পথের সব আঁকিবুঁকি খেলা। সর্পকুণ্ডলীর মতো পেঁচিয়ে ধরেছে আমাকে। ছোবলে ছোবলে আক্রান্ত করে ফেলছে, তীব্র ব্যথার জন্ম নিচ্ছে। আমি মরছিনা। বেঁচে আছি। ভয় নিয়ে বেঁচে আছি।

আমার স্রষ্টাকে পেতে ইচ্ছে করছে আজ। জায়নামাজ খুলে বসলেই কী পৌঁছানো যাবে আলোতে। কৃষ্ণগহ্বর আমাকে আঘাতে জর্জরিত করছেনা। বরং আমার ভিতরে আলোর কাছে যাবার প্রতিবন্ধকতা জন্ম নিচ্ছে। আমি অন্ধকার খুঁড়ছি আলোর জন্য, তার বিপরীত বিন্দুতে দাঁড়িয়ে। ভিতরের অজানা এক জায়নামাজ মুছে দিবে শেষ জীবনের সব পাপ।