Tuesday 31 May 2016

স্পর্শ

স্পর্শ
ইমেল নাঈম 

কলম পুষে রাখে অস্বস্তিকর কিছু মুহূর্ত। লিখতে চাইলেও লেখা যায় না অনেক কিছু। যতি চিহ্নের খামখেয়ালিপনায় নিজেকে গুটিয়ে নিই শামুকের খোলসে। দাঁতে দাঁত চেপে শরীরের উপর দিচ্ছি অমোচনীয় প্রলেপ। মান অভিমানের অপঠিত অধ্যায় নেই আহত জীবনের পালকে।

অবিধানে প্রেম শব্দটা আজও অব্যাখ্যাত, বড়োজোর উষ্ণতা খুঁজতে গা ঘেঁষে থাকা ছাড়া নতুন কোনো শব্দ নেই। এটুকুতেই পাড়ি দিয়ে দিচ্ছো মহাদেশ। মুখে একদানা শস্য, আর তাতেই রটে যায় প্রেম কাহিনী। সেখানে চলে তৃমাত্রিক এনিমেশন ফিল্ম। আমাদের প্রলেপ শক্ত হয়ে ওঠে ফ্যান্টাসি খুঁজতে খুঁজতে।

সাহিত্যের পাতায় অমর সব সৃষ্টি বিরহের। অতো ফ্রাস্ট্রেশন বুকে চেপে কিভাবে পাতার পর পাতা লিখেছিলেন, সেটা সত্যি চিন্তার খোঁড়াক দেয়। প্রেমহীন জীবনে চড়ুইভাতির আয়োজন করি কালবোশেখির দিনে। বলতে না পারার অংকে আমিও ফেইল করা কোনো ছাত্র। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েই ভ্রুকুটি এখনো সংকুচিত করি নি।

একা থাকা আর একা রাখার মাঝে তফাৎ গড়ে দেয় স্পর্শ।

দৌড়

দৌড়
ইমেল নাঈম

সমুদ্রের বুকে একটা স্পন্দন লেখা থাকে। ঐকতানে বেঁধে দেওয়া সুর টুংটাং শব্দে খেলে যায় দূরের পথে। ক্লান্তি আজ একাই খেলছে খেলাঘরে। নিক্বণের শব্দ পাঠ নেই। নেই নীরবতা ভাঙানো স্রোতের কণার উল্লাস। ফেলে আসা সবটুকু যেনো মিথ্যে পরিচয়। একটা পৌরাণিক ব্যাপার হয়তো লুকিয়ে। স্প্যানিশ গিটারের ধ্রুপদী শব্দ নেই, একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছেন নিলয় কুমার দাশ। ঈশ্বরের কোনো কাজ নেই, দীর্ঘ ভ্রমণ শেষে এক প্রশান্তির ঘুমে ব্যস্ত। 

সাগর পাড়ে একা কেউ আসে না। যখন আসে তখন আঙুলে ঝুলতে থাকে কৃষ্ণচূড়া ফুল। এর বাইরে কেউ এতোটা রোম্যান্টিক হতে শিখে নি। ছুপছুপে বৃষ্টি নামলে চুপচাপ ভিজতে থাকে গিটার। গানের গলা নেই, বুকে প্রেম আছে অলিখিত। দৃষ্টির অগোচরে স্বপ্নের পরিসীমায় ত্রিকোণমিতির সূত্র আঁকতে বসেন নি মিসরীয় কুমারী। এরকম অজস্র সুপ্ত অথবা প্রকাশিত কোনো প্রেমই পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসে পাওয়া যায় না। 

ঐতিহ্যগতভাবে কোনো স্বর্ণযুগ নেই পৃথিবীর। যেগুলো আছে তার গায়েও চুনকাম করে দেয়া যায় অর্ধ-অবচেতন সুখে। প্রেম নিয়ে সবগুলো কবিতাই যেনো কক্ষপথ হারিয়ে পৃথিবীতে নেমেছে। এরপর মানুষের মাঝে চাষাবাদ, ধীরে ধীরে গ্রাস করেছে সবটুকু সত্ত্বা। আমি বা আমার প্রাক্তন প্রেমিকারা কেউ কখনো প্রেম শিখে নি। 

আর না শেখা জিনিসের পিছনে এখনো সবাই দৌড়চ্ছে সময় আর অসময়ের মারপ্যাঁচে।

বিষণ্ণতার ক্যানভাস

বিষণ্ণতার ক্যানভাস
ইমেল নাঈম

মৃত্যুকে ছুঁয়ে দেখি। প্রাণহীন অশ্বথ গাছে লেখা থাকে ইতিহাস। লাকড়ির চুলোত বেঁধে রাখা প্রেম আর অভিমান। আকাশটা বড় বেহায়া। শরতের মেঘ কেটে উড়ে বেড়ায় বর্ণিল ঘুড়ি। ঘুড়ির যত গল্প তার পুরোটা আমিময়। নিজস্ব বিজ্ঞাপনের বাজারি কোনো শব্দ থাকেনা, মান অভিমান নিয়েই লিপিবদ্ধ সামাজিক ক্যানভাস।

অবসরে আকাশ আঁকি। সবুজ রঙা আকাশ কালচে মেঘে ঢেকে দিই। ফুরিয়ে গেছে আনন্দের যত আয়োজন। কতদিন রোদ বৃষ্টিতে ভেজেনি পড়ন্ত বিকাল। ছবির মতো মুখ, তেলরঙের আঁকিবুঁকি। অন্যরকমের মায়া, অথচ মুখে কোনো হাসি নেই। শুকনো মুখ আটকে রেখেছে এক বিকেল অভিমান।

অভিনয়ের সংলাপ মুখস্থ করি, আওড়ে চলি আয়নার সামনে। কথার পিঠে চড়ে পেরিয়ে যায় সময়। সামনাসামনি হলেই ভুলে যাই উদ্দেশ্য - বিধেয়। ব্যাকরণ বুঝি না ঠিক, সময়ের নির্যাসে রাখিনি হাত কোনো হাতে।

ফাগুন বিলাস নামক কোনো অসুখে আক্রান্ত করি নি নিজেকে। পিছুটান আর মেঘ পোড়ানোর গল্প, আসি করেও না আসা একটা প্রতিবিম্ব, কিম্বা বোঝার আগেই নীরব প্রস্থান, সেই গল্পগুলো অমীমাংসিত থাকুক....

....ইদানীংকালে, পৃথিবীতে প্রতিদিনই একটা বিষণ্ণ সন্ধ্যা নেমে আসে।

Saturday 28 May 2016

পতন পরিক্রমা

থেমে যেতে হয়... নদীর পারে নৈঃশব্দ্যের জয়গান। নেমে যাও ধীরে — পতনের শব্দে যেন ঘুম না ভাঙে গায়ক কোকিলের। ঝিঁঝিঁরাই জানে কারা যেনো আততায়ী বেশে বসন্তের নীল সীমারেখার পা ভেঙে খোঁড়া করে দিয়েছে বৈচিত্র্যহীন সন্ধ্যায়।

স্বপ্নের বাসরে কার্বন ডাই অক্সাইড খেলে যায় অবলীলায়। হড়কে ওঠা সময়ের বৃত্তে আটকে গেছে ঋতু। পা ফসকানো পর্বতারোহীর পতনে কোনো লাইট... ক্যামেরা... অ্যাকশন... থাকে না। পতনের পরে কাট শব্দটি উচ্চারণ করে কেউ হাতে তালি বাজিয়ে শুভেচ্ছা জানায় না। এই ধরনের দৃশ্যের গোপন দর্শক খুব বেশি।

এরকম অদৃশ্য কাটাকুটি শেষে ব্যক্তিগত শব্দটাকে ক্যামন অচেনা লাগে। গ্রামের ভগ্নাংশ বিদ্যায় মুখস্থ করে নিচ্ছি বোকা বাক্সের সকল বিনোদন। বৃক্ষের কাছে নতজানু হতে গিয়ে মুষড়ে পড়ি অনির্বাণ সুরে।

শৈশবে মুখোশ আমার খুব প্রিয় ছিলো। বনের পথে মৌয়ালদের ছুটোছুটিতে দেখতাম। মুখোশ মুখের পিছনে বাঁধা। মুখ সামনে, ঠিক তার পেছনেই  মুখোশ.... দৃশ্যটা এখনো চোখে বাজে।

বর্তমানে প্রাকৃতিক মুখোশের ব্যবহার দেখে থমকে যাই। বৈসাদৃশ্য শুধু একটাই। মুখোশ সামনে মুখ পিছনে। আর এই জিনিসটা বোঝার জন্য আপনাকে একবার পর্বতারোহণ করতে হবে।

Wednesday 25 May 2016

মনোভাব

মনোভাব
ইমেল নাঈম

মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে আরো একটা মুখোশ
হাসির আড়ালে চাপা পড়েছে অনির্ণীত দুঃখ
প্রশ্নের বিপরীতে প্রশ্ন করতে ভুলেছে নবীন মুখ
ফানুশ ওড়ালেই ষোলকলা পূর্ণ হয় সবার
পরাজয় মানতে শেখেনি শরতের মেঘ
শুধু জেনেছে অচেনা গন্তব্যে ভাসিয়ে দিতে

মুখবইয়ের বিজ্ঞাপনে ঢেকে যায় উচ্ছল মুখ
রকমারি চাকচিক্যে ডুবে যায় অচেনা মানুষ
শরীরকে পণ্যের বেশি ভাবতে শেখেনি মধ্যবিত্ত
প্রেম শব্দে আধুনিকতার নামে হন্তারকের সাথে
সাক্ষাৎ হতে পারে আর্টেফেসিয়াল সুন্দরীর

সম্ভবত এর বাইরেও দেয়া নেওয়া চলতে থাকে
ইচ্ছেবশত ভুলে যাই মন নামক শব্দের উপস্থিতি
মাঝেমাঝে পত্রিকার পাতায় ভাসে স্বেচ্ছামৃত্যু
দোষ খুঁজতে গেলেও অপরাধীর তালিকায়
বেঁচে থাকা মুখ নয়, মৃত মুখটি সামনে আসে।

অদ্ভুত হলেও সত্য, অনিশ্চিত যাত্রা তাকে একটু'
স্বাধীনতা দেয়নি, বাঁচার সময়ে জিততেও শেখায়নি।

Tuesday 24 May 2016

হত্যার গল্প

হত্যার গল্প
ইমেল নাঈম

একটা সম্ভাবনা আর তাঁকে ছুঁয়ে থাকা কোমল লিলি
প্রেম আর কামের মধ্যস্থতায় অনাবিল মেঘমেদুর
সকালের বৃষ্টিস্নান শেষে পিয়ানোর সুরে নতুন
কোনো অভিব্যক্তি থাকে না। সঙ্গীতের ঝঙ্কার শেষে
মধ্যাহ্নের ভাতঘুম। লারেলাপ্পার জীবন আয়োজন।

স্বপ্নের ঘোরে কত কী দেখা হয়ে যায়, অর্ধ অবচেতন
শরীরে কবিতা এসে দোলা দেয়, চোখ খুলে দেখতে
ইচ্ছে করে না। সময় বাড়লে কবিতা ফিরে পিছনে
ওয়ার্ড ফাইল জুড়ে সাদা পাতা, কোনকিছু লেখা নেই
আমি মৃত্যু দেখি অনেক শব্দের, অনেক কথামালার...

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, অনেক শব্দকে মেরে ফেলি
নিজেকে মোটেও হত্যাকারী মনে হয়না, সৃষ্টি সুখে
খুনকে জায়েজ ভেবে বসেছি অনেককাল আগেই
অপরাধবোধকে নান্দনিকতার ভাষায় লেপটে দিই
মেদহীন জিরো ফিগারের অবয়বে ঝুলছে সৃষ্টি
কষ্টের কোনো সুরঙ্গ থাকে না, তারা ধুঁকছে ভিতরে...

সকাল হলে আমি ভুলে যাই অদৃশ্যমান হত্যাযজ্ঞ
অজস্র শব্দের মৃত্যুর বিনিময়ে কবিতার জন্ম,
নান্দনিকতার অবয়বে আমি এখন প্রাণ খুলে
হাসি, কাউকে বলি না অনিচ্ছাকৃত হত্যার গল্প...

Sunday 22 May 2016

ক্যানভাস

ক্যানভাস
ইমেল নাঈম

মাঝেমাঝে দেখা হয়, এরপর নির্বাসনে কাটতে থাকে
সাক্ষাতবিহীন হেমন্ত। দক্ষিণা বাতাস দালানকোঠায়
বাড়ি খেয়ে গতিপকৃতি পালটায়। প্রেমিক কম্পাস
হাতে দিক নির্ণয়ে ব্যস্ত খোলা চোখের ইশারার।

দৃষ্টিকে পটে আঁকতে চেয়ো না, চোখ পড়ার
ব্যাকরণ আজও আবিষ্কৃত হয় নি। আটপৌরে
দৃশ্যগুলো অকালের বৃষ্টিতে ভিজে মিশে একাকার
ঋতু বৈচিত্র্য হারিয়ে স্বপ্নহীন দু'চোখ জল রঙা
দৃশ্যপট আঁকতে আঁকতে বুঝতে শিখেছে ক্লান্তি

পরিব্রাজন শেষে আমাদের উঠে দাঁড়াতে হয়
হেমন্ত আর ঘরে ফিরে আসে না, জলের উপরে
প্রতিবিম্ব নেই, সবটুকু গ্রাস করেছে আমার।

তুমি চোখ আঁকতে যেও না; অতো পরিপক্বতা লাভ
করে নি চিত্রকলা, একনাগাড়ে দহনের দিকে দেখো,
কত সুন্দর টকটকে লাল দাগের আঁকিবুঁকি...
কত মোলায়েম উথলে পড়া আর্দ্র রঙচ্ছটার অবয়ব...

তুলির আঁচড় কাটলে এখানে রক্তক্ষরণের জন্ম হয়।

Saturday 21 May 2016

সীমা পরিসীমা

সীমা পরিসীমা
ইমেল নাঈম

শূন্যস্থানের সামনে দাঁড়িয়ে অযথা সময় নষ্ট কোরো না
একক চিত্র প্রদর্শনীর শেষে মন্দলাগা রোগে চেপে ধরে
চারপাশে যতটা সবুজ তার সবটাই যনো অসহনীয়...
রূপান্তর ঘটাতে ঘটাতে হারিয়ে গেছে মঞ্চের নায়ক
মেঘলা দিনের সংলাপ, আমায় নাড়িয়ে দিয়ে যায়।

অর্থহীন কিছু শব্দের মানে খুঁজি, কৈশোরের ফেলে
আসা রঙপেন্সিল, অংকের খাতা এখনো বেড়াতে
আসে আমার চারপাশে। আমি বৃদ্ধ হয়েছি- মানতে
চায় নি সবুজ ঘাসফড়িঙ। গ্রাম্যপথ ভগ্নাংশ শিখেছে
ইটের সলিং, পেয়ারা বাগান, টিনের ভাঙা ইশকুল বাড়ী
লুকিয়ে লুকিয়ে আমাকে সাঁঝ বিকেলে প্রেম শেখায়।

মফঃস্বলের আকাশ খুব ছোটো, অল্প কিছু ঘুড়ি ওড়ে
আমার কৈশোর কেটেছে ঘুড়ি গোণার নামতা বিদ্যায়
অল্পতেই তুষ্ট তাই পেরিয়ে যায় সময় দ্রুত, বড় হচ্ছে
ক্ষুদ্র আকাশ। অংকে পাকা কিন্তু গুণতে ভুলে গেছি,
আমি অংক করি কিশোর আকাশের বড়ো হবার,
আর উত্তর এলেই ছিঁড়ে ফেলে দিই প্রাপ্ত ফলাফল।

অবাক হয়ে ভাবি, এই সীমা পরিসীমার অদল বদল...

Thursday 19 May 2016

ব্যাখ্যা

ব্যাখ্যা
ইমেল নাঈম

স্বপ্নের বুকে হাতকড়া, অবশিষ্ট কোনো শব্দ নেই
ছাড়তে গেলেও বাঁধা, কুঁকড়ে খায় নীল ফানুস
মায়া - অমৃত অসুখে বেঁধে রেখেছো চারপাশ
স্বপ্ন দেখি না, তাই কবিতাগুলো ভীষণ প্রাণহীন।

ভাতের অংকে কোনো রোমান্টিসিজম থাকেনা
ফার্সি ভাষার দুঃখকে বাঙলায়ন করতে থাকি
এই দেখো আমিও বৃষ্টির মতো দুঃখ বিলাসী
নানান রঙের ও বর্ণের দুঃখের প্রদর্শনী চালাই।

এতোটা হিংসুটে বুকে ভালবাসাটুকু খুঁজি নি
খুঁড়তে বসলে খুব গভীরের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
ছিঁড়েফুঁড়ে বেরিয়ে আসে - এখান প্রায় সবাই
ইতিহাস ইতিহাস করে মরছে। আমি বর্তমানের
পথে প্রান্তরে অকারণ  ঘোরাঘুরিতে বড্ড ক্লান্ত।

নিজেকে বৃদ্ধ, পরিশ্রান্ত ভাবলেই আমার কানে
অ্যান সেক্সটেনের অট্টহাসি ভেসে আসে।
আমি এই হাসির পিছনে গোপন সূক্ষ্ম দুঃখকে
বোঝার চেষ্টা করি - ব্যাখ্যা করি নানারকম।

দুঃখ নিয়ে বলতে গিয়ে একটা কথা বলতে
ভুলেই গেছি, অতীতে আমার নামে সুখ ছিলো
যাকে এখন আমি দুঃখের জননী বলেই ডাকি।

জীবন প্রবাহ

জীবন প্রবাহ
ইমেল নাঈম

স্যাঁতসেঁতে প্রাচীর খুলে বেরিয়ে আসেনা আলো
অজস্র ঋণে জর্জরিত আজ উত্তরের জানালা
প্রান্তিক শহরে আজ আনন্দের বিজ্ঞাপন নেই —
সেইসব স্বপ্নকথন কে রূপকথার আদলে
রূপ দিতে গিয়ে চাকরী হারানোর পথে প্রেমিক

পানামা পেপারস জুড়ে ধানি মরিচের বিজ্ঞাপন
গিলতে বসে ঝাল লেগে গেছে তৃতীয় বিশ্বের
সোনালী ধানের মৌসুম, ধান মাড়াইয়ের কল —
সেও নব্য প্রেমিক সেজে মতো অভিমান করে
কালবোশেখি কতটা কালো তা পরিমাপ করতে
বসে অসহায়ত্ব খসে পড়ে ক্যালকুলেটরের।

এই শহরের কবিরাও বড্ডবেশি ছেলেমানুষ
তারা বুকে টেনে নিতে জানে আবার ছুঁড়তেও
শিখেছে... নোংরা শব্দমালার ডিস্টেম্পার
দেখে ধারণা করি — তারা কবিতার আদলে
অর্থহীন কিছু সুন্দর বাক্যের জন্ম দিয়েছিলেন।
আমি ভাবতে থাকি সেই সমস্ত সৃষ্টি নিয়ে।

দূরের বটগাছ তুমি আরেকটু নত হও প্লিজ...

Tuesday 17 May 2016

ঈশ্বরের ছুটি

ঈশ্বরের ছুটি 
ইমেল নাঈম

ঈশ্বর আপনি ছুটিতে যান, অনেক হলো বেলা

নগরীর সাইরেন বাজলে ছুটে যায় মত্ত ঘোড়া
আবেগের ঘাড়ে চেপে বসে নীল প্রজাপতি
ওদিকে স্বর্গের দরজায় বন্ধ করেছে দারোয়ান
কোথায় কে কিভাবে ঢুকবে জানা নেই কারো

জাহান্নাম - আমার ভেনাস, এখনো দাঁড়িয়ে
ঈশ্বর তুমি সিজারের মতো ভেঙো না তাকে
এতোটা আঘাত সহ্য করতে পারবে না ঈশ্বরী

ক্লিওপেট্রা তোমার কাছে বন্ধক আজন্ম ঋণ
ফিরে যাও দূরে। অতো রূপে পুড়িও না রাজ্য
আমি নিঃস্ব হতে বসে রচনা করি জাহান্নাম
তার প্রতিটা স্তরে বেরোয় পটে আঁকা ছবি।

নান্দনিক অভিশাপে পুড়ে যায় আমার রোম, 
পালিয়েই বাঁচি আমি, প্রেম বলতে ইদানীং
কেনো জানি জাহান্নামের ছবি চোখে ভাসে
পুড়ে যাওয়া - হাতছানির গল্পে বিরানভূমিতে
আপনার শ্রাদ্ধের আয়োজন করি অজান্তে।

ঈশ্বর আপনার চিরস্থায়ী ছুটি , আমিও প্রস্তুত
যুদ্ধসাজে কিন্তু ছদ্মবেশী প্রতিপক্ষ খুব ধূর্ত...

Friday 13 May 2016

পলাতক ভবঘুরে

ইমেল নাঈম

অনর্থক হিসেবের ফুলঝুরি, ভুল নামে পাঠ উৎসব
দায় রাখি নি পৃথিবীর, পৃথিবীও রাখেনি আমাকে -
খুব সহজজ হিসেব! একই সাথে বসবাস অথচ
কেউ কারো নয়। বৃক্ষের কাছে নত হই অবেলায়
পলেস্তারা খসা দেওয়াল সেও আজ রহস্যময়।

অতোটা সহজ নয়, যতটুকু ভেবেছিলো কপাল
তার নিচে দু'চোখ কোনো ব্যাকরণ মানে না
চশমার পুরু কাচ ঢেকে রাখে বাষ্পীয় অভিমান।
গ্রীষ্মের তাপদাহে নাভিশ্বাস ওঠা সময়ের পরিক্রমায়
অপরাধ ভুলে গিয়ে অঙ্কুরোদগম ভুললো বেতফল।

প্রজাপতি নিয়ে আক্ষেপ নেই, শুধু চুরি যাওয়া
সময়টুকু আহত করে যায়, আহতরূপেও আমি
কম সুদর্শন নই। কপালজুড়ে ব্যান্ডেজটাই বলে
দেয় কপাল জিনিসটা মূলত গজ কাপড়ে বাঁধা।

বাস্তব নয়, পুরোটা অলীক কল্পনার চিত্রপট মাত্র
রক্তক্ষরণ - সেও তো গ্রীষ্ম কালের ভাতঘুম
কাটাছেঁড়া খেলা, অজস্র মতবাদের ভিড়ে খসে
পড়া নাম, ঠিকানাপত্রে লিখা পলাতক ভবঘুরে।

Saturday 7 May 2016

ঘরে ফিরা

ইমেল নাঈম

এরুমভাবে কথা কয় না, আল্লাহপাক গুনা দেয়
হুনি থামি যায় কিশোর মন, ফ্যালফ্যাল চোখে
তাকাই থাকে, যদিও জানে না দেখনের মানে!
নিচের দিকে তাকাই থাকি, স্যাঁতস্যাঁতে মাডিও
কথা কয়, আমি বুঝি না কথার অক্ষরবিন্যাস।

ল্যাদা ছুটকিয়ার কান্দনের শব্দ, কারণ জানিনা।
বেগ্গুনের অলক্ষ্যে বাইর হই ফরি ঘরেরতইন
এইটা এমন এক লুকুচুরি খেলা, নিজেরতইন
ফালাই বাচতে হয়। ফালাইতে ফালাইতে নিজেরে
খুব অফরাধী হিসেবে মনে হয়, অথচ জানিনা
এমন ফলাতক জীবনের মূল ধারাফাত কোনাই।

ফিরি আসার ফত খোলা নাই, লুকাই থাকনের
তীব্র ইচ্ছারে ফালাই দিই মরা সিলোনিয়ার বুকে
ঘরে ফিরবার চাই, কিন্তু ফিরুম ক্যান? ফ্রশ্নের
দোলাচালে দুলতে থাকে দেয়াল ঘড়ির কাটা
আঁই সাতরঙা আকাশ দেখি, আকাশরে ফড়ি
দেখি ফুরো আসমানজুড়ে এক নিঃসঙ্গতার গল্প।

সন্ধ্যা নামে, রাইত হয়, আঁই আর ঘরে ফিরি না...

Wednesday 4 May 2016

দর্শন

ইমেল নাঈম

আচম্বিত রূঢ় বাস্তবের সামনে খাঁড়াইতে হয়।
ফকৃতির গতিবিধি বুঝি না, তাই ব্যকরণের
ভুলে বারবার হারাই ফেলি আফন ফথ
এরোই মাঝে বদলি যায় অনেক কথাবার্তা

ছ্যাবড়া খাওয়া একটা সকাল উঁকি মারে
দুয়ার খুলে চাই, চোখে কিছুই ঠাহর হয় না
আগদুয়ার থেকে চোখ দিই বাইন দুয়ারে,
দেখি রশি ঘরে - উনুন জ্বলে, আর দেখি
মিঁয়া বাড়ীর ফুস্কুনির ঘের'র মাছ ধরা

ব্যাককিছু দেখি, তবুও কি জানি দেখি না...

আহা! সোনামুখ কতকাল দেখিনা তোমায়
কি আরো? কেমন কাটে তোমার দিনকাল?
খানিক বাদেই কামে যামু সদরে, কাম করনের
লাই করি, মন টা ফড়ি থাকে তোমার কাছে

বর্ষা শ্যাষেই ফিরমু, কিন্তু ওই বাস্তবিক রূঢ়...
হের সামনে নিজেরে খুব অসহায় লাগে
চোখে ব্যাককিছুই দেখি, কি জানি দেখি না...