প্রেমের ধুন
ইমেল নাঈম
মন খারাপের দিনগুলো মুছে যায় বৃষ্টিতে। চারপাশে এতোটা জল, ঠাণ্ডাভাব... তার উপর পাশের ফ্ল্যাট থেকে বয়ে আসা নজরুল... মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনতে থাকি "পদ্মার ঢেউ রে... পদ্ম নিয়ে যা যারে..."
কখনো দেখিনি তাকে। কণ্ঠস্বর শুনে অনুমান করি, ওপাশের মানুষটি অনেক সুন্দরী। নামটাও জানিনা এখনো। মাঝেমাঝে ইচ্ছে করে অনুরোধ করে বলি কবিগুরুর ওই গানটা শোনাতে... "আমার মন মানেনা..."
অবসর সময়টা বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকি। দূরের বিলাসবহুল অট্টালিকা। আকাশ দেখিনা। বাতাসটুকু আসেনা। গানটা মাঝেমাঝে শুনি, বেশিরভাগ সময় সেটাও শোনা হয়না। সুযোগ পেলে তোমাকে শোনাতে ইচ্ছে করে কবিতা... শুনেছি তুমি নাকি চোখে কাজল দাও। অবসর সময়ে ক্যানভাসে আঁকিবুঁকি খেলো। চারুকলা অনুষদে আমি কখনো যাইনি।
ছবির হাটে সিগারেট খেতে খেতে অচেনা মুখের চেনাজানা গান শুনেছি কত। সেখানে কেউ কেউ ছবি আঁকত। সেখানে কী তুমি ছিলে? এই ধরো ৩/৪ বছর আগের কথা বলছি। ওহ তুমি তো সেকেন্ড ইয়ার! শহর বদলে গিয়ে হয়েছে চট্টগ্রাম। তাহলে তোমাকে আমার দেখা হয়নি আজও। তবুও কেনো এতো আপন লাগে তোমাকে।
চেনাজানা মানুষের ভিড়ে কিছু অচেনা মানুষ এতো গভীরে ছাপ রাখে কী করে! জাদুকর নাকি হিপনোটাইজ করার প্রবল শক্তি। শুনেছি তুমি নাকি বের হও প্রতি বিকেলে। এরপর অভয়মিত্রঘাটে বসে কর্ণফুলীর সাথে কথা বলো। নির্বাক স্রোতে ভেসে ভেসে কবিতা শোনাও।
আমিও থাকি সেখানে। কর্ণফুলী আমাকে প্রেম শেখায়। আমার মনখারাপের দিনগুলো দিই তাকে। তোমার সাথে কী কথা হয় আমাকে নিয়ে? আমি যে কণ্ঠের প্রেমে পড়ি সে কথা কী বলেনি আজও! তোমার চুলের গভীরতায় ভেসে আসে অজস্র তিমির রাতের গল্প।
আমি পাঠ করি কবিতা, কল্পনায় ভাসো তুমি। ওদিকে চেনা কণ্ঠে কানে বাজছে কল্পনায় অনুরোধের গান "আমার মন মানেনা... "
প্রকাশকালঃ ১৪ আশ্বিন ১৪২৪