Wednesday 29 August 2018

ব্যর্থতার সঙ্গীত

ব্যর্থতার সঙ্গীত
ইমেল নাঈম

কিছু দাগ জামার সাথে আটকে যায়। কিছু ক্ষত এখনো উঁকি দিয়ে যায় পিছনের বারান্দায়। সঙ্গীতের শেষে কিছু রেখা অর্থহীন হয়ে উঠে। ড্রয়িং পেপারের এলোমেলো কিছু আঁকা। দিনের শেষে থেমে যেতে হয় শুনেছি অনেকবার। কারণটা আজও অজানা রয়ে গেলো। তড়িৎ আবেশ মুছে গেছে আকর্ষণহীন হয়ে পড়ে নীলাভ আকাশ। মেঘ ছুঁতে চাওয়ার অপরাধে এখনো স্মৃতিকাতরতায় ভাসতে থাকি।

বিপ্রতীপ স্থানে দাঁড়িয়ে কেবলই দূরত্ব মাপি। ঘোলাটে চোখের মাঝে অজস্র ব্যাকরণ লুকিয়ে সুখ আঁকে। বিমূর্ত শব্দচারণে উঠে আসে ধূসর কিছু মুহূর্ত। প্রিজমের মতো দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে ওপাশের বিম্বটা। কিছুতেই মিলে না আলপিনের সমাবেশ। সব যেন ছন্নছাড়া দ্বীপের মতো একে অপরের থেকে সরে যাচ্ছে আরও দূরে। দূরত্বের ধ্রুবক মান লিপিবদ্ধ নেই পাঠ্যবইয়ের কোনও অধ্যায়ে।

এড়ানোর মন্ত্রটিও ভুলে যাই, রোজ পুরনো হচ্ছি। কপালের রেখারা স্পষ্ট হচ্ছে, আঙুলের কড়ে শব্দগুলো মৌন হতে শিখে নিয়েছে এমনই করে। তবুও থমকে যাই, অসময়ের ঝড়ো বাতাস আসলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি, অল্প আঘাতে বিমর্ষ হই। হাঁটছি একা অথচ কবিতায় যাপন করছি না। মন নেই নীরব সাধনায়। একটা ভাঙচুরকে উপভোগ করছি নিকট দূরত্বে দাঁড়িয়ে।

এই ভাঙচুরের খেলায় নিজেকে মনে হচ্ছে জুয়ারি। হাতের ভাঁজে লিখছি প্রণয় সংক্রান্ত ব্যর্থ উপমা, অবশিষ্ট দিনের রোজনামচায় শুধুই কাটছি পাপ। ভরে যাচ্ছে কবিতার খাতা ব্যর্থ কিছু শব্দে।

Saturday 25 August 2018

প্রতিবিম্ব

প্রতিবিম্ব
ইমেল নাঈম

আয়নার ও'প্রান্তের বন্ধুটিও আমার মতো দুঃখ পোষে।

চেয়ে দেখো, কপালের বলিরেখায় ক্লান্তির ছাপ 
চোখ বেয়ে নিভৃতে নেমে আসে নির্জন অভিমান 
নীরবতাও কথা বলে, অনেক দৃশ্যপটের ভিড়ে 
একটা স্পর্শ বদলে যায় অভিযোগের পাহাড়ে।

হাত ছুঁতে ক্লান্ত হই, নাগরিক পাখির কণ্ঠে ঝরে 
অধিকারহীন হবার সনদ। জগদ্দল পাথর সরালে 
শব্দরা নিঃস্ব হয়। প্রতিদিন বেঁচে থাকার মানসে 
মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে—এই আলিঙ্গনের পরশ 
নিয়ে কেটে যায় প্রতিদিনের বিরামহীন কার্যক্রম।

ওই পাশের অবয়বটুকু অবিকল আমার মতো। 
দুঃখের বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে ব্যস্ত এক মনোবিদ, 
অবলীলায় দিন যাপনের দৃশ্যপট আঁকে প্যাস্টেলে। 
বন্ধুটির চোখ, মুখ, নাক, গ্রীবা, চওড়া বুকে 
প্রতিধ্বনিত হয় স্বপ্নসুখের ভগ্নাংশ, ভাঙা ফুলদানি।

ওপাশের বন্ধুটির উপরে জন্মায় আমার যত অবিশ্বাস।

Wednesday 22 August 2018

নৈঃশব্দ্য কোলাজ

নৈঃশব্দ্য কোলাজ
ইমেল নাঈম

করতলজুড়ে দুঃখ, বিনিদ্র রাতের গল্পে কোনো নায়িকা নেই। জীবনের প্রতি স্তরে থোকায়থোকায় রহস্যগুলো এখনো হেসে ওঠে হুট করে। নিজেকে নিয়ে প্রশ্ন করে উঠি অবচেতন মনে। রহস্য মুছে যায় দূরের দেশে। মুহূর্তগুলো বিমূর্ত অবয়বে হেসে ওঠে চুপচাপ।

আমাদের দিনগুলো মলিন হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। রাফখাতায় লিখিত প্রেমের ভাঁজে প্রহসন, নিজেকে নিয়ে ভাবনায় আটকে ফেলেছি দ্রুত। ছুটে চলা পাখির মতোন। মার্বেলের মতো ছুটে যাই অকারণে। লারেলাপ্পার মতো ছুটে যাচ্ছি অবহেলা নিয়ে।

কোথাও তো থেমে যাবার সময় থাকে। শুভ্রতাটুকু নিয়ে হেরে যাওয়ার আগমুহূর্তে কিছু রেশ টিকে থাকে। মূর্ছনা কেটে গেলে নিঠুর বাস্তব আজো হেসে ওঠে। নিজেকে নিয়ে পেরিয়ে যাচ্ছি আল্পস পর্বত। পৃথিবীকে আগলে রাখছি দিনের সব হিসাবটুকু নিয়ে। মরুর কঠোরতা আজো হেসে ওঠে।

কৃষকের মুখ দেখে হিসাব করতে বসো না, পলির জমাটবদ্ধ ঋণগুলো। নির্বাক জীবনের ক্যানভাসে টিকে থাকে কিছু স্পর্শ। খড়িমাটিতে লিখে রাখা কিছু দাগ, নিজেকে নিয়ে প্রশ্ন করতে করতে মিলিয়ে যাচ্ছি অঝোর শূন্যতায়। দিনের হিসাবে রেখে যাচ্ছি মুহূর্তকালীন নৈঃশব্দ্য।

Monday 20 August 2018

ছায়াপথ

ছায়াপথ
ইমেল নাঈম

কার মুখ দেখো? কোথাও তো আঁকা নেই স্পর্শ।
প্রশ্ন করে দেখো— উত্তরফল কী তা নিয়ে ভেবো না
অনেকে পালিয়ে গেছে আগে, এ পথ কণ্টকাকীর্ণ।
প্রলেপ মুছে ফেলে একটু হাসো, নির্বাক মুখের
ভাষাটিও আনমনে লিখে রাখছে ধ্রুপদী ঘৃণা,

প্রশ্ন করা ভুলে যাও, অনেক হয়েছে প্রহসন।
পেরিয়ে যাও ভুল বারান্দা, মায়ায় বেঁধো না আর
কিছু ক্ষত মুছে যাবে সময়ের করাঘাতে, বিনিময়ে
জ্বলবে না পাওয়ার ক্ষতবিক্ষত বুকের আর্তনাদ
চুপচাপ সয়ে যাবে, অভ্যস্ত হয়ে যাবো দ্রুতই।

কিছুই দেখা হয় নি আমার, একঘেয়ে ভালবাসার
নিকুচি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি, বিভ্রান্তি
নিয়ে অপেক্ষা— যেনো হারিয়ে ফেলা পিয়ানোর সুর
অর্কেস্ট্রা থেমে গেছে বিদায়ী সঙ্গীতের সম্ভাষণে
চুপচাপ ঝরে গেছে জলের ধারাপাত, শেষের অঙ্কে
মিথ্যে প্রলোভনগুলো দুঃখ নিয়ে হাসছে নীরবে

খেলাঘর বন্ধ হোক, মিথ্যের ফানুশ ওড়া বন্ধ হোক।
নিয়মের বেড়াজাল ভেঙে বেরিয়ে আসুক সত্য
ক্ল্যাসিকের রোমান্স ভেঙে বেজে উঠুক অন্যধারা

নিজেকে বয়ে যাচ্ছি মালবাহী গাড়ীর মতো
আবিষ্কারের নেশায় আটকে ফেলছি আবার,
নিয়মের কূট চালে মায়াজাল ছিন্ন হতে ভয়...
সেই ভয় নিয়ে পেরিয়ে যাচ্ছি নিজের ছায়াপথ।

Sunday 19 August 2018

বিরহ বাগান

বিরহ বাগান
ইমেল নাঈম

দুঃখের সমাবেশ ফেলে চলে যাই দূরের পথে।
আলো নাকি অন্ধকার? ভাবতে ভাবতে বেজে ওঠে
প্রলয়ের সাইরেন, মুহুর্মুহু শব্দগুলো হঠাৎ মুছে
যেতে থাকে... আলোকচ্ছটা মুছে যায় অসময়ে।

ব্যথাতুর, সাম্যহীন একটা সময় আঁকতে বসেছি
পিছনের আঘাতটুকু সয়ে নিচ্ছি, বিনিময়ে হারিয়ে
ফেলছি একান্ত সময়গুলোকে, বিনির্মাণ সূত্রে
কেবলই হাহাকার— ক্ষয়িষ্ণু মুহূর্তের শিলালিপি
মুছে যাচ্ছে অমানবিক আঘাতকে সাক্ষী করে।

ঘড়ির কাটা বদলে যায়, বদলে যায় মুখোশগুলো
নিজেকে নিয়ে ভাবতে বসি, অজস্র শূন্য পাতার
পরে শেষ পৃষ্ঠাতে গিয়ে বুঝি নিজের অক্ষমতা...
শব্দহীন, সন্ধিহীন নিজেকে দেখে হেসে ফেলি।

চাষাবাদের শেষে থমকে যায় বিরহ বাগান
ফুল ঝরে গেছে, নিরাশ মৌমাছিরা ফিরে গেছে
ক্রমশ বিরহবাগানটিও সেজে উঠছে ধূসর বর্ণে।

Thursday 16 August 2018

শিরোনামহীন কবিতা – ১

শিরোনামহীন কবিতা – ১
ইমেল নাঈম

গোপন সংকেত! ডেকে যায় ধুলোমাখা পথ,
নিজের বলে কিছু নেই, প্রান্তিক শব্দসাজ
ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে পিছনের পথে।
বারবার আহত হই তবুও ফিরি না ঘরে—
নির্ভার শব্দের কাছে রেখে গেছি ঋণ।

ছুঁতে চাওয়ার বিনিময়ে হেরে যাওয়া দেখি
বিক্রি হওয়া নিজেকে মাপি অন্য চোখে,
ঘোলাটে দৃশ্যপটে লিপিবদ্ধ সময়ের সাঁঝ
সমাবেশ ভাঙলে দাঁড়িয়ে থাকি একা
নিঃসঙ্গতার ভাঁজে হাসছি অন্য আমি।

নিযুত চোখের অজস্র কাতরতা দেখছি
মলিন বুকে হেসে যাই— অর্থহীন হাসির
অর্থ মাপতে বসে ভুল করছি অংকে
অপেক্ষায় থাকি, কোনো মঙ্গলধ্বনির
ধ্রুপদী সঙ্গীত থেমেছে অনেক আগেই।

চোখে ভাসে সুন্দর মোড়কে প্রতারণা
আহ্বান মুছলে সামনে কেবলই অন্ধকার
ঘড়ির কাঁটা থমকেছে, ক্লান্ত আমার
সামনে অপেক্ষা ছাড়া কোনো গতি নেই।

Wednesday 15 August 2018

নিথর তর্জনী

নিথর তর্জনী
ইমেল নাঈম

আঙুলের তর্জনী মুছে গেছে অকাল বৃষ্টিতে
পাড়ায় পাড়ায় চলছে বিরহের গান, নিভৃতে বেজে
যাচ্ছে বিষাদের রিংটোন, কেবল মায়াভরা
কিছু দৃশ্যপট নিয়ে মুছে যাচ্ছে আমাদের হিসাব...

নিথর দেহ, মেঝেতে পরে থাকা চশমা,
সফেদ পাঞ্জাবীর দুঃখ এখনো কাল্পনিক বিন্যাসে
ক্রমশ কাঁদিয়ে নিয়ে যায় আমাদের দূরদেশে,
নিজেকে অসহায় লাগে নি খুব একটা,
অচেনা মানুষের ভিড়ে কিছু মানুষ খুব আলাদা

লুকিয়ে যাওয়া মানুষগুলো বেরোয় না আর
গান ভুলে যাওয়া পাখিদের কথা জানা হয় না
কবিদের কলমজুড়ে অদ্ভুত নীরবতা—
এক বন্ধ্যাত্বকে লিখে রাখছি তেতাল্লিশ বছরে

যদিও চোখ আটকে যায় দূরের সব গলিপথে
নির্বাক জীবনের ছবি আঁকা হয় দ্বিচারী ক্যানভাসে
নিমকহারামের রক্ত মিশে আছে শিরায় শিরায়
দুষিত রক্তের নহর বয়ে যায় আমাদের শরীরে

অনুতাপহীন— সংকোচহীন— একটা জীবন
ফেরি করে যায় মুখোশধারী নেকড়ের দল
হাঙ্গরের উত্থান দেখে খুশিতে আত্মহারা হতে
দেখে ঘৃণায় গা গুলিয়ে ওঠে নি আমাদের

একটা তর্জনীর ভার নিতে শিখি নি আমরা
একটা মৃতদেহের ওজন বইতে পারে না পৃথিবী
সেও ক্রমশ কেঁদে ওঠে— এতটা অসহায়
লাগে নি নিজেকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে।

Tuesday 14 August 2018

প্রতিবিম্ব

প্রতিবিম্ব
ইমেল নাঈম

নির্বাক হাতেখড়ি, গল্পের মোড়কে নেমে আসা ভুল নাম
কিশোরীর পায়ে ছিলো মায়াবী ঘুঙুর, ছেলেটিও চালাতো সাইকেল
প্রেম আর অপ্রেম— তারমাঝে ঘাপটি মেরে থাকা প্রহসন

চলে যায় দূরে মেষের দল, বালক রাখালও মিথ্যেবাদী হয়
সন্ধ্যা নামলে গির্জার ঘণ্টায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনি
গ্রেভইয়ার্ডে শুনি কেবল পায়ের শব্দ, নিজেকে শক্ত
রাখতে মন্ত্র জপি, ভুলের মাশুলকে জাগিয়ে দিচ্ছি বারবার

সঙ্গীত ভেসে দূরের কোথাও, শোকসঙ্গীত! আমাদের ক্লান্তিকর
যাত্রার শেষ অধ্যায় লিখা হয়েছে গিলাফ জড়ানো বইয়ে
নিয়মমাফিক সকাল সন্ধ্যা পাঠ করি নিজের আমলনামা।
প্রাপ্তিকালীন সময়ে দাতার হাত খেয়াল করি নি,

ডান হাত, বাম হাতের ফাঁকে অজুহাত নিংড়ে দেয় অভিমান
নিজেকে পাঠ করতে করতে দেখে ফেলি আয়নার বিম্ব
একটা শয়তান আমাকে শুনিয়ে যাচ্ছে পুণ্যের বাণী;

পরেরদিন পত্রিকার পাতায় ছাপার অক্ষরে মিলিয়ে নিচ্ছি সব;
পড়ছি প্রহসনের গল্প, তাকে নিয়ে লেখা ছন্দের কবিতা
খেলাঘর ভাঙলে দেখি জোকাররাই টিকে আছে দিনশেষে।

Friday 10 August 2018

নীরবতার ক্যানভাস

নীরবতার ক‍্যানভাস 
ইমেল নাঈম

থমকে যায়— নীরব কিছু গল্পের ভাঁজে মৌন গল্প
লিখে রাখছি। দূরান্তের সুর কেবলই ডেকে যায়।
থামবার কথা নয়, তবুও মুখরিত... রেখে দিচ্ছি
দিনের গোপন হিসাবনিকাশ, কারো কাছে
গোপনীয় কিছু লেখা নেই, শুধুই প্রহসন বাকী।

টিকে থাকে— আমাদের চাওয়াপাওয়াগুলো
দরজার ফাঁক গলে হেসে দিচ্ছে অকারণে,
অসময়ে নির্বাক গল্পের প্লট লিখতে লিখতে
ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি দূরের পথে, ছেড়ে দেওয়া
হাতও লিখে রাখছে ঘাম চোখের ক্যানভাস।

খেলে ফেলছি তাশের রঙ। হরতন, রুইতন
ফেলে জেগে থাকে রহস্য পত্রিকার গল্পকার
লিখে চলেছে দিস্তার পর দিস্তা, দস্তানার
ভিতরে লুকোনো সব প্রহসন, প্রেমিকের গল্প
মুছে ফেলেছি নিয়মের সাথে— রুটিনমাফিক।

ঝরে পড়ছে শিউলিফুল, অতঃপর বেচে দিচ্ছি
নিজের সব অনুভব, হাতের স্পর্শ মুছে গেলে
তোমার ছায়াটিও অচেনা হয়ে যায়, বিমূর্ত
দৃশ্যপট মুছে যায় গোপন হিস্যার অমিল নিয়ে।

Wednesday 8 August 2018

ভুল হিসাব

ভুল হিসাব
ইমেল নাঈম

মিথ্যে প্রলোভনে কাটাকুটি খেলা চলতেই থাকে, রাষ্ট্রবিরোধী সঙ্গীতে বেজে ওঠে দিনের সব অংক, থেমে যাওয়ার মূলমন্ত্র ছড়িয়ে ফেলছি বিষ। অংকের খাতায় কাটাকুটি খেলা চলছে। দিনের হিসেবে ব্যর্থ অভিনেতা হয়ে ফিরছে দূরান্তের আভায়। মিশে যাচ্ছে পাপের মহিমা। পুণ্য ফেরি করতে বসেছি ভুল উপত্যকায়। কেবলই ছুটে চলা মরীচিকার পিছনে।

দূরের আকাশ মিশে যায় মাটিতে। ছুঁতে যাওয়ার লোভটুকুও মিশিয়ে ফেলছি প্রান্তিক হিসাবটুকু বুকে নিয়ে। অল্পতে বিমর্ষ হয়ে পড়ছি, নান্দনিক আবেশে নিজেকে নিয়ে লিখছি প্রেম গাঁথা, চুপসে ওঠা গ্যাস বেলুনে চুপিচুপি উড়ে যাচ্ছে দূরে। নীরবে দেখছি নিভে যাওয়া সূর্যের আলোটুকু। অপঠিত প্রেমের কবিতার মতো নিভে যাচ্ছে আমার ভিতরের পুরোভাগ।

প্রতারকের জীবনী লিপিবদ্ধ করি। এরবেশি কিছু লিখি নি ব্যক্তিগত সংবিধানে। কোথাও থেমে যায় দূরের সাইরেন। হুইসিল বাজিয়ে চলে যায় গাড়ী দূরে। ফকফকা আলোর অপেক্ষায় রাত্রিযাপন। নির্বাসন নাকি পলায়ন তা নিয়ে ভাবা হয় নি খুব একটা। আবরণ খুলে ফেললে লুকোনোর কিছুই থাকে না। বিভ্রম, বিভেদ নিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকি।

একদিন থমকে যায় সময়। ঘড়ির কাঁটা মুছে ফেলে জীবনের আনন্দক্ষণ। ছুটে চলার বিনিময়ে রয়ে যায় বিমূর্ত কিছু উপভোগ। মুছে যায় বিনির্মাণের সকল যন্ত্রপাতি। কাল্পনিক সুখে ছুঁয়ে যায় নিজের ভুলগুলো। টিকে থাকে কিছু রেশ, ভুলে ভরা কবিতার লাইন। থাকুক জীবনের কিছু প্রতারিত মুহূর্ত। ব্যক্তিগত খোলস খুলে যায় আমার, প্রকাশিত হয় অন্ধকার।

বাস্তবের মুখোমুখি হতেই চেয়ে দেখি সকাল হতে ঢের সময় বাকি।