Monday 26 February 2018

মধ্যরাতের কবিতা — ১
— ইমেল নাঈম

দরজা বন্ধ, ফিরে গেছে পুরনো ডাহুক,
সারাদিন ডাকাডাকি শেষে ক্লান্ত রেইনবো,
কিচিরমিচির থেমে গেলে শূন্যতা নামে

একোরিয়ামজুড়ে গোল্ড ফিশের বসবাস
কেবল ভেসে চলা মাছেদের গল্প শুনি
অক্সিজেন, একফোঁটা নিঃশ্বাস — অমূল্য।

ঘড়ির কাটাজুড়ে নিঃসীমতা, রেখে দিয়েছি
হিসাব নিকাশের প্রাথমিক আয়োজন
ঢালছি... সাজিয়েও দিচ্ছি মদের পেয়ালা

নেশার মধ্যভাগে আমিও বেয়াড়া প্রেমিক
গালিবের মতো শের আওড়ে ঢুকতে পারি
তোমার শরীরে, গোপন বুনোহাঁস নিয়ে...

এরপর মাছের গল্প শোনা হয়নি আমার
বইছে কৃত্রিম অক্সিজেন শূন্য একোরিয়ামে।

Friday 23 February 2018

সাধক

সাধক
ইমেল নাঈম

নীরবে আলিঙ্গন করো সময়কে
মহাকাল — সেও হাঁটুক নিজের পথে
তুমি চুপচাপ বসো চূড়ায়, অতঃপর ধ্যান...
শব্দের জন্য নতজানু হও,
  
বসো কবিতার জন্য — বেদনা লিখ
হতাশা ঝরাও, ঝরে পড়ুক শুকনো ফুল
ক্যামেলিয়া সুঘ্রাণ ছড়াক, নাইটকুইন
এক চিলতে হাসি বিলিয়ে ঘুমিয়ে যাক

এই সময়ে মায়া নিয়ে বেঁচে থাকো
চুপিসারে প্রজাপতি এসে বসবে গায়
তাকেও বুকে রাখো, অন্তরে গাঁথো
বুদ্ধবাণী শোনাও, বুলাও হাত যীশুর...

খুব বেশি চায়নি, একটু খেলতে চেয়েছে
ভালবেসে রাখতে চেয়েছে অবসরে
কবিতার কাছে নত হও — দেখো...
গভীরে তাকাও, পুরষ্কার এক প্রহসন।

তাকে নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস দেখিও না 
কবিতায় ফিরো সেই গায়ে বসা
প্রজাপতির জন্য, ভালবাসার জন্য।

Tuesday 20 February 2018

আরাধক
ইমেল নাঈম

চুপিসারে অনেক শব্দমালা পুড়িয়ে ফেলতে হয়
আরাধনায় বসো সাধক, একাকীত্ব'র খুব কাছাকাছি।
নির্ভেজাল অক্সিজেন, আর সজীব শুভ্রতার সমন্বয়ে
যতিচিহ্নের ব্যবহার বুঝতে হয়, জানতেও হয়।

মুখ সামলে রেখো, ভোরে পাখির কলতান শোনো,
নদীর বুকে কান পাতো বুঝবে বয়ে চলার সংযম
উপলব্ধি করো প্রতিবিম্বে, আয়নার সামনে দাঁড়াও...
ফিরো কবিতার কাছে, বিশুদ্ধ অক্সিজেন পাবে।

কথা নয়, ঢাকঢোলও নয়। নীরবে সাধনায় মত্ত হও
শব্দের জন্য বসে থাকো সারাক্ষণ, ভাবনার দরজার
খিল খুলে দাও, কথারা আসুক, ভেসে বেড়াক...
মুখকে করো সংযত, থাকুক যতিচিহ্নর ব্যবহার।

কলমের কাছে ফেরো, অভিমানের পারদ গলাও...
আঘাত করোনা, বিনিময়ে প্রতিঘাতে বিদীর্ণ হবে
ভালবাসার বিনিময়ে ভালবাসা নাও পেতে পারো
যদি সামান্য মেলে, তাকে মাথায় মুকুট বানাও।

হয়তো ডাকছে বিচক্ষন প্রেমিক, হয়তো মহাকাল...

Sunday 18 February 2018

হসপিটাল থেকে

হসপিটাল থেকে
ইমেল নাঈম

গোপনীয়তার প্রাচীরে বিমূর্ত দুঃখের সাথে আলাপন
নাতিদীর্ঘ ঘুমের মাঝে জেগে আছে প্রহসন
নির্বাসন ভুলেছে আয়োজন, জীবনপাঠে অজস্র
প্রদীপ; ক্ষয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে — নীরবতায়।

কর্কশ চোখে রক্তিম আভা। হাসপাতালের বেডে
শুয়ে লেখা চিঠি, কল্পনায় ইচ্ছে করলে হেঁটে ফিরি
কলেজ রোড হয়ে চট্টেশ্বরীর আনাচেকানাচে
নাম না জানা মুখের দিকে দেখি — বিমর্ষ চোখে।

মৃত্যু পরম সত্য, তাকে সেলিব্রেট করো
বেঁচে থাকার আনন্দের মতো সেলিব্রেট করো

খেলাঘর ভাঙে, নিশ্চুপ সময়ের টোপে আটকাই।
গোলকধাঁধার উত্তর খুঁজতে খুঁজতে নামে রাত
প্রহসন অথচ উজ্জ্বল — কী প্রভাময় সময়!

হাসপাতালের সিটে বসে অনুভব করি মুহূর্তগুলো
সম্মুখপানে কণ্টকাকীর্ণ ক্ষণের কঙ্কালসার দেহ;
সেখানে চোখ পড়তে দেখি সবকিছু নস্টালজিক।

Friday 16 February 2018

প্রহসন
ইমেল নাঈম

বঞ্চনার বিপরীতে গান থেমে যাক। আমরা কোরাস
তুলি সমস্বরেঃ আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী
সবকিছু মেনে নিয়ে চুপ থাকি
ঘুমিয়ে যাক শৈশবের ঘুমপাড়ানিয়া গানের শব্দে

অন্যায়ের প্রতিবাদহীন থাকাই হালের ফ্যাশন
গৃহপালিত প্রধান বিরোধী দল, অথর্ব অন্যান্যদল
নিজের স্বার্থ দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়না,
জনগণের পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে, পিষে যাবার
মনোবাঞ্ছায় ধৈর্যপরীক্ষা দিচ্ছে প্রশ্নফাঁসের সময়ে

টঙদোকানে চায়ের কাপে ইদানীং ঝড় ওঠেনা,
ব্যস্ত লোক জুয়াখেলায়, আসরে ওড়ে টাকার বাণ্ডিল,
মধ্যবিত্ত'র কৈমাছের প্রাণে কাটছে শামুকজীবন

সুযোগের অভাবে সৎ হয়ে ঘুরছে এক কালপ্রিট
সুযোগ পেলেই চে'র টিশার্ট গায়ে দিয়ে ঘুরেফিরে
আর শিল্পকলায় গাঁজার আসরে রবীন্দ্রনাথ মাড়ায়
দিনশেষে আফসোসের সুরে হতাশার কান্না ঝরায়
সুযোগ পেলে সেও চুদে দিবে নৈতিকতার চৌদ্দগুষ্টি

পাহাড়ে শান্তি নেই, কেবলই শুনি ধর্ষিতার চিৎকার
জলপাই রঙকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক পাহাড়ে
রক্তের দামে কেনা পতাকা, তবু কেন শৃঙ্খলাবদ্ধ?
শরীরের দাম শরীর দেবে, কে তুমি চুতিয়া?
রাতের আঁধারে গুম করে নাও পাহাড়ি রমণী
টুঁ শব্দ নেই, চুপ থাক খাংকি, মাগি...
বহু আগে উর্দুতে কেউ শুনেছিলো এমন শব্দবাণ

একদলা থুঃথুঃ ছিটিয়ে এনেছিলো ঘৃণার প্রকাশ
স্বাধীনতা কতটা কাছে থেকে তুমি কতদূরে দাঁড়িয়ে

Thursday 15 February 2018

কর্ণফুলীর কবিতা
ইমেল নাঈম

সাম্প্রতিক স্পর্শগুলো দোদুল্যমান পেন্ডুলামের মতো ঘুরপাক খায় নিয়ম মেনে। কতগুলো মুখ চোখ পাকিয়ে তাকায় দক্ষিণ দরজায়, মুহূর্তগুলো অনুবাদ করে নিঃসঙ্গতার কবিতা। নদীজন্ম মিথ্যে নয়, অভয়মিত্রে বসলে সেই উপলব্ধি সত্য বলে মনে হয়।

প্রান্তিক উপলব্ধি মননশীলতার দ্বৈরথ ভেসে ওঠে দর্শনে, কবিতায়। ঢেউ মাপতে বসা যুবকটি ইঞ্জিন ওয়ালা সাম্পানের দিকে তাকিয়ে থাকে অনেকটা সময়। ও'দিকে ভুলের বৃত্তে পেরিয়ে যাচ্ছে বোহেমিয়ান বাতাসে। মুসাফির বিকেলে দেহতাত্ত্বিক গান শুনি, শোনে ব্যস্ত জনপদ।

দিনের মাপকাঠিতে বিষণ্ণ সময় আছে। লিপিবদ্ধ দিনপঞ্জিকার পাতায় লাল নীল দাগ আছে, বিভ্রম জড়ানো অনেকটা সময় নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার নিপুণ অভিনয়। পুতুল খেলার ইতিবৃত্তে জড়ানো মায়া – নির্বাক জীবনের গল্প লুকোচুরি খেলে আদিম ঘ্রাণে।

সন্ধ্যা নামে ছাতিমফুলের ঘ্রাণে। প্রেমিক দম্পতি চলে গেছে আপন নীড়ে, একা দাঁড়িয়ে থাকি। কর্মব্যস্ত মানুষের ভিতরের রোমান্টিসিজম খুঁজি – ক্ষুধা আর সংগ্রামের অংকে। নদীজীবন ব্যর্থ নয় মোটেও – জানে অভয়মিত্র ঘাট আর কিছু জানি আমিও…

Tuesday 13 February 2018

বসন্ত বরণ


বসন্ত বরণ
ইমেল নাঈম

মায়াকানন ফেলে চলে যেতে হয় দূরে। নিজের কাছে অচেনা হতেই ভেসে আসে সুরভিত ধ্বনি। ব্যস্ত শহরে ইট পাথরের সভ্যতায় নির্বাক সময়ের হাতেখড়ি। খেলার মাঠ পেরিয়েছে হাইরাইজ বিল্ডিং। আকাশ ছোঁয়ার ইচ্ছে রাখে যে যুবক তার দিকে তাকিয়ে মায়া জন্মায়। নিজের ব’লে কিছুই রইলো না তার।

পাতা ঝরা সময়ের পরে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকাই যায়, নির্ভুল সময়ের ন্যানো সেকেন্ডে ভর করে লিখে রাখছো গত শীতের পাপ। বিদ্ধ করে যায় অনবরত। নিজেকে নিয়ে লেখা কবিতাগুলো উদ্দেশ্যহীন। ওড়াওড়ি করে ক্লান্ত, নামাচ্ছে রাতের খেল। উইন্ডচাইমের দিকে তাকিয়ে দেখি আমি ছাড়া আর কে আসে, এই ঘরে।

নির্জনতা গ্রাস করে নেয় দু’ধার। কিশোরীর গা হতে ভেসে আসে দামী সুগন্ধি। চুলের ঘ্রাণ নিই, বারবার নিজেকে ফিরিয়ে আনে কৈশোর, টঙ দোকানের খুব কাছে। নিষিদ্ধ ঘ্রাণের লোভে বারবার দাঁড়িয়ে থাকা সময়গুলোর কাছেও আছে অনেক ঋণ।

রোববারের কোনও আবেদন নেই। চুমুর আবেদন জানেনা মধ্যবিত্ত বুক। ফাগুন... ফাগুন... বলে চিল্লানোতেও কোনও মানে নেই। তাকিয়ে থাকি সামনের দিকে, পা ছুঁয়ে আসে ঝরা পাতার আর্তনাদ। জন্মানো নতুন পাতার সমাবেশে নিজেকে দৌড়প্রতিযোগিতার বৃদ্ধ ঘোড়া মনে হয় – যার আছে অখণ্ড অবসর।

Sunday 11 February 2018

ছায়াবৃত্ত
ইমেল নাঈম

১।
নিজেকে আয়নায় দেখো — গভীর বলিরেখা
এই দাগগুলো জীবনের গাঢ় গল্প বলে
পাশাপাশি শুয়ে দুজনে রোমন্থন করে অতীত
বর্তমান ভাসছে... উড়ছে... সুলেমানি জায়নামাযে

২।
আরশে আজিমে চোখ রেখে মদ্যপান করি
পশ্চিমের আকাশে আযান, পূর্বে ঘণ্টাধ্বনি
শাদার পাশাপাশি রঙচঙের সহবস্থান
আরশে আজিম থেকে চোখ সরে যায়
তোমার নিটোল স্তনের দিকে...

৩।
তীর্থস্থানে আমারও যেতে ইচ্ছে করে
কিন্তু ওখানে একাকী প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ
কমপক্ষে দু'জন হলে খুলে যায় সদরদরজা
আমি আজও ছুঁতে পারনি তোমার হাত।

৪।
জমিনে বিছিয়ে দিই লালসালু
দিকে দিকে রটে যায় কানকথা
কাল্পনিক গল্পে হারিয়ে যাও, তুমিও...

Saturday 10 February 2018

সার্কাস পার্টি
ইমেল নাঈম

জলবন পেরোলে এক মুঠো উষ্ণতা থাকে
রোজ সকালে গায়ে তাপ মাখায় অষ্টাদশী তরুণী
নিজেকে নিয়ে ব্যস্ততা মাপতে পেরিয়ে যাই
ছায়া ঘনীভূত হয়, উপরের প্রান্তিক অনুরণনে।

উপচে পড়া আলিঙ্গনে দেখি দিনযাপনের দুঃখ
জলের উপর হাতের পরশ থাকেনা
মাটিতেও রাখিনা পা, হাওয়াতেই ভাসি
কাল্পনিক বিন্যাসে মুখোমুখি হই — সমানে।

সামলে রাখি নিজেকে, প্রান্ত বদলে যায়
ষোলোগুটি খেলা কিশোরটিও হয় পরিণত
মার্বেল জীবন ছিদ্র খোঁজে ঢোকার জন্য
মানবজীবন শরীর নয়, মাথা লুকায় — উটপাখি
দেখতে দেখতে পার করে দিচ্ছি ক্যালেন্ডার।

মাছের জীবনে রয়ে যায় মূল্যহীন হালখাতা।
হুট করে পালিয়ে যেতে হয় দূরের পথে,
নিজেকে আলগাতে পারি চিকন দড়ির উপর,
সার্কাস পার্টি শেষে  রিং মাস্টার, জোকারের
পাশে দাঁড়ানো আমিটা খুব অচেনা…

সার্কাস টিম
ইমেল নাঈম

জলবন পেরোলে এক মুঠো উষ্ণতা থাকে
রোজ সকালে গায়ে তাপ মাখায় অষ্টাদশী তরুণী
নিজেকে নিয়ে ব্যস্ততা মাপতে পেরিয়ে যাই
ছায়া ঘনীভূত হয়, উপরের প্রান্তিক অনুরণনে।

উপচে পড়া আলিঙ্গনে দেখি দিনযাপনের দুঃখ
জলের উপর হাতের পরশ থাকেনা
মাটিতেও রাখিনা পা, হাওয়াতেই ভাসি
কাল্পনিক বিন্যাসে মুখোমুখি হই -- সমানে।

সামলে রাখি নিজেকে, প্রান্ত বদলে যায়
ষোলোগুটি খেলা কিশোরটিও হয় পরিণত
মার্বেল জীবন ছিদ্র খোঁজে ঢোকার জন্য
মানবজীবন শরীর নয়, মাথা লুকায় -- উটপাখি
দেখতে দেখতে পার করে দিচ্ছি ক্যালেন্ডার।

মাছের জীবনে রয়ে যায় মূল্যহীন হালখাতা
নিজেকে নিয়ে পালিয়ে যেতে হয় দূরের পথে
নিজেকে আলগাতে পারি চিকন দড়ির উপর
যেনো সার্কাস পার্টি শেষে  রিং মাস্টার আর
জোকারেরপাশে দাঁড়ানো আমিটা খুব অচেনা

Friday 9 February 2018

উদ্দেশ্য
(উৎসর্গঃ বিন্দু'কে)

আমাদের কলম ছাড়া আর কোনো বন্ধু নেই
ভাষা প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে কাগজকেই চিনি
তাতে লিখে রাখি দৈনন্দিন জীবনের প্রবঞ্চনা

কেউ চায় সবসময় নিচু থাক আমাদের ঘাড়
অথচ আমরা আকাশ দেখতে ভালোবাসি
তারা বলে অনুগত হতে প্রভুভক্ত কুকুরের মত
বিনিময়ে হাসতে হাসতে বলে উঠি বাঞ্চোদ

তারা মুখে এক, কাজেকর্মে আরেক।
আমাদের মুখ নেই, কাজ অনেক
তাদের অঙ্গভঙ্গি মূকাভিনেতার মত

আমরা কুর'আনের পাশেই রাখি বেদ
তার পাশেই স্থান দিই ওল্ড টেস্টামেন্ট
ত্রিপিটকও রাখি, সেইসাথে রাখি মার্ক্স।
এদের সাথে জড়িয়ে দিই নাস্তিক্যবাদ...

আমাদের মুখ নেই, অভিনয় নেই, কাজ অনেক
আকাশে ছুড়ি চালাই, দ্বিখণ্ডিত করব ব'লে
হাসতে হাসতে অপমানটুকু মাথায় তুলে নিই...
এরপরও বলি কলম এক স্বাধীনচেতা সত্তা

বিশ্বভূগোল বদলেছে আগে, তুমি বদলাবে কবে...
এখনো মোনায়েম খানের ভুত চাপিয়ে হাঁটছো?

আমাদের কথারা টুঁশব্দটিও করেনা
খাতায় লিখে রাখে প্রথাবিরুদ্ধ অভিযান।

Thursday 8 February 2018


প্রোপোজ ডে
ইমেল নাঈম

"Can I cheat you again"
দশের চেয়ে আলাদা। দিনপঞ্জিকার পাতা উলটে যায় দিনের নিয়মে। কোনো হেরফের নেই দিনরাতের। চলেছে ঘড়ির কাটা, আহ্নিকগতি আর বিষুবরেখার পাঠে মলিন নয় মুখ। নিশ্চিত ঘুম শেষে সকালটিও অনন্য হতে পারে। নিজের কাছে প্রশ্নবোধক, বিস্ময়সূচক অনুভূতি জানান দেয় আর কত... আর কতটা বাকী খেলনাবাটি খেলার।

খেলাঘর ভাঙেনি, মিলনায়তনে আসছে নতুন মুখ। উদ্বেল জানান দেয় স্নায়বিক চাপ। বুকের গহীনে তাপমাত্রাও বাড়ে - নিজের কাছে হেরে যাওয়ার গল্প আত্মস্থ করি। কানে কানে শুনিয়ে যাচ্ছি পুরোনো কীর্তন। রাজা প্রজাদের ভিড়ে কেবলই রূপকথা নেমে আসে। বিনিময়ে মোহাচ্ছন্ন দিনলিপি লিখে রাখছি অন্যের চোখে।

হাত বদলে যায় হাতের স্পর্শে। প্রথম বলে আসলেই কিছু হয়না। প্রেমেও আবার দ্বিতীয় শব্দ বলে জানা যায়নি। খারাপ লাগাটাও শব্দটাও আপেক্ষিক। নিজের সাথে বিনম্র কথোপকথনে হারিয়ে যাবার পূর্বে তৃপ্তিস্বরে বেরোয় একটি শব্দ - "আহ"

দিনের গল্পে মুখচ্ছবি... মন খারাপের ভিড়ে নিজস্ব শব্দমালাগুলো ফিকে হতে হতে মুষড়ে যায়। নিবেদক হারায় তার আবেদন, বিস্ময়ের দোলাচলে নির্বাক হয় ধূসর পাণ্ডুলিপি। আর, প্রেমের আবেদনগুলো ত্রিমাত্রিক অবয়বে পালটে যায়।

Tuesday 6 February 2018

কমরেড কে

কমরেড কে
ইমেল নাঈম

বলুন কমরেড, বিশ্ব বাজারে চাল, তেল, নুনের দাম
ক’টা কবিতা লিখে পরিশোধিত হয়... কতটা রক্তক্ষরণ
লিখে রাখতে পারে শব্দমণ্ডলী যা ব্যর্থ হয়না মহাকালে।

শেয়ালের ডাকে কী আগাম ধারণা করেন সকালের
ভবিষ্যৎবাণী ছাড়েন গ্রহ নক্ষত্র আর পাথর বিন্যাসে
বলুন লিডার, গণিতের সকল ভাষা এতো জটিল কেন

কেন যোগের পরেই বিয়োগের অংক কষতে হয়
ভাগের আগেই বা গুণ কেন করি বারবার
সাংকেতিক চিহ্নগুলো কেন রক্তাক্ত করে আমাকে
ভরদুপুরের হিসাবে কেন মিলেনা প্রাপ্তির যোগাংক।

হিমাংকের কথা লিখি নাতিশীতোষ্ণ বুকের উষ্ণতায়
কমরেড বলুন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং ঠেকাতে কবিতা
কেন ব্যর্থ, আফ্রিকার মঙ্গায় ক’টা কবিতা জন্ম হয়

চুপ থাকবেন না লিডার, আপনি জানেন সবকিছু
আপনি আমাকে জানান, আলোকিত করুন হে মহান
বলুন, কবির মাংস কবিরা কেন খায় — এর স্বাদটুকু
কেনইবা নিতে তৃতীয় পৃথিবীতে এতো আস্ফালন

কমরেড বলুন, নদীর দেশে কবিতা কেন ব্যর্থ
রূপ বৈচিত্র্য নিয়ে কুলীন অবয়বে কতদূর হাঁটছি
আর কতটা পথ পেরুলে কোথায় হবে এর শেষ।
কমরেড জবাব দিন, চুপ থাকবেন না প্লিজ...

Thursday 1 February 2018

শিরোনামহীন - ১

শিরোনামহীন - ১
ইমেল নাঈম

হিসেব তোলা থাকে হিসেবের ভেতরে
ম্লান মুখটিও ঝাপসা হয় মলিন সময়ে
জমছে কথা পাখির কোলাহলে।

শীতকালীন অবকাশে গোছানো জীবন
শাপলুডু খেলে, মুছে পাপবিদ্ধ সময়
যাযাবর হাতছানি, প্রশ্নবিদ্ধ নিজেকে
নিয়ে পাড়ি দিই গ্লানিমুখর রুদ্ধ পথ,

সব পথ মুছে যায় দুপুরের খেয়ালে
টিকে থাকে মুহূর্ত প্রান্তিক সভাস্থলে,
অভিমানের পারদ গলে সুতীব্র তাপে।
অচেনা পাখির ডাক... উইন্ডচাইম...

নৃত্যের মুদ্রায় প্রাণের নিত্য স্পর্শ বাঁচে
ডাকাডাকি থামলে নিঃসঙ্গ প্রান্তরও
প্রহর নামায় দিন দুপুরের অবহেলায়

সময়ের ভাজে অলীকতা বিভোর ক্ষণ
সম্মুখে তাকাই...এক বিশাল শূন্যস্থান...
অংকিত নেই কোনো চিহ্ন সময়রেখায়।