Wednesday 25 April 2018

বিষণ্ণময়ী'র ভালবাসা

বিষণ্ণময়ী’র ভালবাসা
ইমেল নাঈম

ভালবাসতাম। এখনো বাসি। কবিতাও লিখতাম। লিখতে তুমিও। দুজনের লেখা কতশত যুগল কবিতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মনের কোণায়। তোমার লেখনীতে ভর করতো বিষণ্ণতা, যেন একটা ভোকাট্টা ঘুড়ি পাক খেতে খেতে পড়ে যাচ্ছে ইলেকট্রিক খাম্বার তারের উপর। তারপিছে দৌড়ে চলেছে একদল কিশোর।

আমি তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতাম। তোমার গা থেকে ভেসে আসতো দামী পারফিউম। আমি মুগ্ধতার শেষটুকু নিয়ে তাকিয়ে থাকতাম। তোমার শান্ত চোখ কত অব্যক্ত কথা বলতো তখন, মৃদু হাসিতে অদ্ভুত নির্ভরতা পেতাম। তোমার চওড়া বুকে মাথা পাতলে যেন এক স্বর্গীয় অনুভূতি। আমাকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যেত আমার থেকে অনেকদূরে।

আমার কবিতাগুলো পড়ে তুমি মুচকি হাসতে। আর মুগ্ধতায় বাহ বলে উঠতে। বিশ্বাস করো আমি কবিতার ক বুঝতাম না তখন। অথচ আমার চোখে খেলে যেতো বিস্ময়ের সুর। তুমি বলতে আমার লেখায় সারল্য আছে। যা সহজে আকৃষ্ট করে সবাইকে। আমি বলতাম এই সারল্যটাই আমার সম্পদ।

একদিন ভিতরে ঘোর বৃষ্টি হলো। বাইরে উজ্জ্বল দিন। কী অদ্ভুত বৈপরীত্য! নিজেকে এতোটা অপরাধী মনে হয়নি। তুমি বলেছিলে থেমে যাওয়ার দরকার। অথচ, আমরা থামার জন্য পথ চলিনি। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিজের দোষ বের করতে চাইলাম। পেলাম না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বুঝতে চাইতাম, কতখানি বদলে গেছি। নিজের প্রতিবিম্ব ছাড়া আর কিছুই পেলাম না।

দিন কারো জন্য বসে থাকেনা। ঝড়ের পরে লণ্ডভণ্ড প্রকৃতিও আবার সাজিয়ে নেয় নিজেকে। নীরবতা ভেঙে গেয়ে ওঠে পাখি। আমিও গুছিয়ে নিয়েছি নিজেকে। চোখে কাজল দিই, ইচ্ছে হলে শাড়ি পরি, কপালে টিপও দিই। এখনো ভালবাসি তোমাকে, আসলে ভালবাসাটা একটা অভ্যাস মাত্র। ভালবাসতে কোনও কারণ লাগেনা।

No comments:

Post a Comment