Sunday 27 November 2016

একটি দৈনন্দিন রুটিনের খসড়া

একটি দৈনন্দিন রুটিনের খসড়া
ইমেল নাঈম

সকাল ৭ টা ৩০,

মুঠোফোনের অ্যালার্ম মোরগের কাজ করে দেয়
বুঝে নিই, এক যোদ্ধার যাত্রারম্ভ অনাকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধের
শীতের সকালের রোদ্র, উত্তাপ মাখেনা সহজে গায়

তাড়াহুড়োর শুরু, বারবার ঘড়িতে চোখ রেখে দিই
নয়টা বাজতে কতটা সয় বাকি, সময় স্বল্পতায়
সকালের নাশতাটাও ঠিকঠাক মতো করা হয়না।

নয়টা বাজতেই ঢুকে পড়ি অফিসে, আবহাওয়া দপ্তরে
অলিখিত বিপদ সংকেত বাজতে থাকে অবিরত!

দুপুর ১১ টা ৩০,

দুটো টোষ্ট বিস্কুট আর এক কাপ চা, খেতে খেতে
ভাবতে থাকি দাবা খেলার পরবর্তী চাল, নিপুণ
অংকে বাড়াই সৈন্য, হাতি, ঘোড়া, কিস্তি, মন্ত্রী...
এতে কোনো জিতার অভিপ্রায় নেই, শুধু রাজা
বাঁচানোর দৈনিক প্রচেষ্টাকে বিজয় ভেবে ধরে নিই

দুপুর ১টা ৩০,

যোহরের নামায শেষে ডাইনিংয়ের দিকে মিছিল
ভালো মন্দ গিলতে গিলতে সবার কথা শুনি
ঠাট্টাতামাসার মাঝে কূটনৈতিক বাক্যবাণে মুগ্ধ

নিজের মুখকেও হতে হয় সাবধানী, এভাবেই
দুপুরের খাওয়া শেষ হয়ে আসে, এরপর বাইরে
তামাক পুড়িয়ে ফের অফিস গমন। চেয়ারে
বসে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে কাজে মনোযোগ।

বিকাল ৪টা ৩০,

ডিরেক্টর ওরফে ডিক্টেটর মশাইয়ের সামনে ক্লাস টু'র
বাচ্চার মতো মনোযোগী হয়ে বসে থাকা, সব কথায়
হাঁ হাঁ করতে করতে নিজের বিরক্তিকে আড়াল করা

ফিরে এসে অধীনস্থকে মনের ঝাল মেটানো
আর নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করতে গিয়ে
খেয়াল করা ঘড়িতে তখন বিকাল ৫ টা,
আফসোসের সাথে বারবার নিজের ভাগ্যকেই
গালি দিয়ে সম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করা

সন্ধ্যা ৬ টা ৩০,

কাজ শেষে বের হওয়া, আর স্বস্তির একফোঁটা নিঃশ্বাস
কাল আবার একই কাজ করার সুযোগ বিনিময়ে
কিছু টাকা মাসের শেষে....

রাত ৮ টা,

ল্যাপটপের ইনবক্সে একটা ওয়েব ম্যাগের জন্য
কবিতা খোঁজা সম্পাদকের সাথে আড্ডা দেয়া আর
স্ট্যাটাসের কমেন্টে কবি বলে অবিহিত করায়
নিজের মধ্যে অলীক সুখ অনুভব করা,

রাত ৯ টা,

ক্লান্ত শরীরে আধা মনোযোগে কোনো বই পড়া

...প্রিয় বন্ধুরা, আমার কবিতা প্রস্তুতি ঠিক এতটুকুই...
তবুও কোন সাহসে তোমরা আমায় কবি বলে ডাকো?

No comments:

Post a Comment