Wednesday 14 November 2018

ভুল বিক্রিয়া...

ভুল বিক্রিয়া... 
ইমেল নাঈম

সময়ের আলাপনে দিগভ্রান্ত হই। সুর কেটে যাওয়া কোনও গানের কলি এসে কানে জানিয়ে যায় ভুল ঋতুর সন্নিবেশের কথা। নিজেকে নিয়ে ব্যস্ততার মন্ত্র পড়ি, ঘড়ির কাঁটায় মেপে নিচ্ছি দুপুরের একাকীত্ব। খোলা জানালায় দৃষ্টি, মেঘ নেই, ফকফকা আকাশ, তবুও বিষণ্ণতা। গণতান্ত্রিক দুঃখগুলো বিরোধী দলের মতো— মিটিং, মিছিল, আল্টিমেটাম আর হুশিয়ারি জানিয়ে যায় জীবনের গাড় অধ্যায়ের বাঁকে।

সংলাপ, নাকি আত্মসমর্পণ। বারবার চুপসে যাই। মায়া জাগানিয়া শব্দের কাছে অভিমান জানাই। আয়নার ওই পাশের মানুষটাকে দেখে গালি দিই। ব্রিগেড ছুটে বুকের ভিতরে। সমাজতান্ত্রিক দাবিদাওয়া বুকে। সুখের মন্ত্র শিখি স্বৈরশাসকের কাছ থেকে। পুরনো মুখগুলোকে এঁকে ফেলি মোবাইল অ্যাপে। এরপরে রেখে দিই গোপন কুটিরে। পাসওয়ার্ড দিয়ে আটকে দিই, ব্যথাগুলো আমারই থাকুক।

বৈদ্যুতিক আবেশের দরকার নেই। পজিটিভ নেগেটিভের সন্নিবেশ না হোক আগের বারের মতো। সেগুলোকে সাজিয়ে রাখছি বুক সেলফে, রেকে তুলে রাখছি। কর্পূর দিয়ে অবহেলাগুলোকে যত্ন করে রাখছি। সপ্তাহে দুইদিন ঝেড়ে মুছে নিচ্ছি। রাতে ঘুম না এলে, খুলে দেখছি তাদের। ভালোবাসাগুলোর বিপরীতে কী দাঁড়ায়— অবহেলা নাকি ঘৃণা। এই সহজ সমীকরণটুকু বুঝতে পারছি না।

কত সহজে দ্বিতীয় পক্ষ মিলিয়ে নিয়েছিলো জটিল সব হিসেব। ভালোবাসার প্রথম পাঠেই দেখলাম বনসাই বৃক্ষ আর ইকেবানার বাণিজ্যিক সমাহার। অলংকারে ভরে গিয়েছিলো ভালোবাসার ঘর। আকাশ দেখতে অলিখিত নিষেধ এই ভালোবাসার, হাঁপিয়ে উঠছিলো পাখি মন। মুক্তির সংজ্ঞায় ইতিহাসের বইয়ে যা কিছু লিপিবদ্ধ তার পুরোটাই প্রহসন।

আমি ঠায় দাঁড়িয়ে আছি, পেরিয়ে যাচ্ছি সব রাস্তাঘাট। সুসজ্জিত দুঃখরা সঙ্গ দিচ্ছে। আমি বুঝে নিচ্ছি ভালোবাসার নীল মোহর— প্রভাবকের ভুল বিক্রিয়ায় যে কখনো মিলিত হয়নি কাঙ্ক্ষিত বিন্দুতে।

No comments:

Post a Comment