Monday 25 June 2018

বৃষ্টি দিন

বৃষ্টি দিন
ইমেল নাঈম

বৃষ্টি হলে আমার কবিতা পায় না, প্রেম পায় না। দূরের দৃশ্যে ভেসে যাওয়া দেখি। জলমগ্ন আবহাওয়া। ঋণের বোঝায় যুক্ত নেই কোনও নাম। মুষলধারায় বৃষ্টি হলে আমি জানালায় দাঁড়াই, ব্যস্ত সড়কের ব্যস্ততা মাপি। রিকশাওয়ালাদের ছুটে চলা দেখতে দেখতে জ্বালিয়ে ফেলি সিগারেট। আর ইশকুল ফেরত বাচ্চাদের উৎফুল্লতা মনের ঘরে আঁচড় কাটে। এই কাটাকুটির কারণটাও আমার জানা হয় নি। পাড়ার দামাল ছেলেরা ফুটবল খেলে, বলের পিছনে দৌড়চ্ছে শৈশব। আমি শুধুই দেখি।

বৃষ্টি এলে আমার কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে না। আনমনে তাকিয়ে থাকি শুধু। মাঝে মাঝে হুডতোলা রিকশাই নয়, জল ভেঙে ছুটে চলে মোটর যান। আমি ভাবি কেন এই ব্যস্ততা? যদিও এটুকু খেয়ালে রাখি নি, নিজের জন্য অবকাশটুকুকে কিনে নিচ্ছে নামীদামী কর্পোরেট কোম্পানি। আর, একদল লোক জীবনের তাগিদে ছুটে বেড়ায় রাস্তায়। দেখতে দেখতে দেখি এলাকায় জল জমে গেছে। বৃষ্টির মানে বদলে যায়, বাইরের দৃশ্যপটে স্থবির হতে থাকে ক্রমশ। ভিতরে? কেইবা রাখে তার খবর?

বৃষ্টিতে কেউ কেউ নাকি ঝালমুড়ি খায়, খিচুরি পাকায়... আমার ওসবে মন নেই। কেন জানি ভালো লাগে না। ইউটিউবে রবীন্দ্র সঙ্গীত লাগিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে বৃষ্টি মাপে। যারা রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনে না তারা শোনে প্রেমের গান। বৃষ্টি কী কেবলই প্রেমের কথা বলে? বিচ্ছেদ, ভাঙচুর এসব কী নেই বৃষ্টিতে? নেই হবে হয়তো! এতো খবর তো রাখি নি। নইলে এতো আনন্দ কীভাবে মশগুল হয় মানুষ? অজস্র প্রশ্নবোধকে আটকে যাচ্ছে আঙুল।

বৃষ্টি হলে আমার কবিতা পায় না, প্রেম পায় না। কেবল বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখতে ইচ্ছে করে বৃষ্টির রঙ, মৌন ভাষার ব্যাকরণ বোঝার আদিম ইচ্ছেটা মাথাচাড়া দেয় মুষলধারায়, বৃষ্টির ছন্দে নৃত্তটুকু উপভোগ করতে থাকি, অলক্ষ্যেই বেজে ওঠে মোজার্ট। চোখের সামনে ভাসে মার্কো রথকো'র আঁকা অবহেলিত ছবি, যাকে কিনে নিতে চাইছো এখন কোটি টাকায়।

No comments:

Post a Comment