Monday 18 January 2016

পরশ্রীকাতর

বিশাল বটবৃক্ষ, তার নিচে শ্যাওলা জমে, ছত্রাক জন্মায়, পিঁপড়া দৌড়ে। স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে ওঠে বৃক্ষের গা। শিকড়ের প্রান্ত দিয়ে দৌড়ে যায় নেংটি ইঁদুর। তুমি সব কিছু বাদ দিয়ে দেখো বৃক্ষের দিকে। বিনয় দেখো, দেখো তার পাণ্ডিত্য। দেখো শ্যাওলাগুলো, ফাঙ্গাস জমা সবুজ বর্ণগুলো, লাল পিঁপড়া কিম্বা আশ্রিত কোনো নিরপরাধ প্রাণীকে, বটবৃক্ষকে ব্যবহার করে বেঁচে থাকা প্রাণ।


একদিন দেখবে শ্যাওলাদের জড়ো হওয়া সমাবেশ, ছত্রাকের ক্রমাগত বংশবিস্তারে, আরো স্যাঁতসেঁতে হয়ে ওঠা গা। একসময় মিথ্যে অহমিকায় নিজেরাই নিজেদের বৃক্ষ মনে করে গড়ে তোলে সমবায় সমিতি। ইঁদুরটি নিজেকে ভাবে পাইথন, পিঁপড়েটি বাঘ। নিজেদের মাঝে গড়ে ওঠা প্রেমে ক্রমশ রাজনীতি এসে যোগ দেয়। সুন্দরের চেয়ে বহুগুণ বাড়ে অসুন্দর। পরশ্রীকাতরতা এখানে বাসা বাঁধে অবলীলায়। উদারতার গল্প হারিয়ে গেছে কঠিন কোনো পুস্তকের পাতায়.... এখানেও রাজনীতি , স্বজনপ্রীতি , হিংসা লালিত হয়.... টিকে থাকে সত্ত্বার ভিতর আর বাইরের মাঝে বিশাল পরিবর্তন।

বট বৃক্ষটি নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে। আহত হয়, কাঁদে, দুঃখ প্রকাশ করে। অমরত্বের এই সাধনাটুকু গন্তব্যহীন পথে যাত্রা। এখানে থেমে যাওয়াই গন্তব্য ঠিক করে দেয় আবার ছুটে চলার পিছেই লুকানো থাকে অচেনা অনন্ত এক যাত্রাপথ। যার শুরুটা মোটামুটি সবার জানা থাকলেও শেষ বিন্দুটার অবস্থান কোথায়, কেউ দেখে নি।


প্রকাশিতঃ আই পোয়েট পত্রিকা।

No comments:

Post a Comment