Tuesday 9 February 2016

রোদ্দুরের চিঠি

প্রিয়তা,

অনেক দিন বাদে আবার লিখছি। জানতে চাইছি না কেমন আছো? জানি ভালো আছো। এতো ভাল আছো যে সুখও তোমাকে দেখে ঈর্ষান্বিত। শুনেছি নতুন এক জীবনের হাতছানি দিয়ে ডেকেছে। ব্যবসায়ী পাত্র। অংকে তুমি বরাবরই কাঁচা, অথচ জীবনের অংকটা মিলিয়ে ফেললে প্রথমবারেই। অনেক দিন বাদে তোমার ম্যাসেজ আমার মুঠোফোনে, আশঙ্কা নিয়েই খুলে দেখি কষ্টের এক বিশাল আয়োজন নিয়েই এসেছে সে।

অতীত মনে করি না। কষ্ট বাড়ে খুব। আচ্ছা এই তাসনিম নাকি কি যেন লোকটার নাম, সে কি জানে আমার কথা। নাকি তাকে আড়াল করেই এগিয়েছো এতোটা পথ। মাঝে কিছুদিন আগেই খবর শুনেছিলাম কোন এক প্রবাসী ছেলের সাথে ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জারে ভালোই সময় কাটাচ্ছিলে। সেও কি আমার মতোই অযোগ্য ছিলো? নাকি যোগ্যতার মাপকাঠিতে অন্যকোনো উপাদান বেশি থাকায় সেও হারিয়ে গেলো তোমার সামনে থেকে!

নাহ, তোমাকে অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাবো না। বস্তুত অধিকারহীন মানুষ এতোসব করতে পারেও না। ওভারড্রপের ড্রয়ারে তোমার দেয়া চিঠিগুলো এখনো আমার সাথে কথা বলে। প্রতিটা চিঠি যেনো একেকটি স্মৃতিকথা। তারাই মনে করিয়ে দেয় তোমার আমার মান অভিমান আনন্দ বেদনা আর প্রবঞ্চনা। নাহ, প্রবঞ্চনা টা বাদই দিই। এতে করে তুমি ছোট হও না, বরং ছোট হয়ে যায় আমার একমুখো ভালবাসাটুকু।

আজ মুঠোফোনের খুদে বার্তাটুকু বুকের জমিনটা আরেকটু ভিজিয়ে দিয়েছে। আমি মোটেও কাঁদছি না, অথচ ভেতরের প্লাবনটুকু বর্ণনাতীত। যার সাথে বিরহের এতো সুন্দরতম সহবাস তার চোখে জল আসে কী করে! আমার সারাবছরই বর্ষাকাল। ফরাসি আবহাওয়ার মতো এই বৃষ্টি, এই রোদ। বৃষ্টি বললেই তুমি রোমান্টিকতায় পরে যেতে। এখানের বৃষ্টি মোটেই রোমান্টিক নয়। বরং দিন শেষে কষ্টের দিন গুজারে পার হয়।

প্রিয়তা ভালো থেকো তাই চাই বরাবরের মতো। অন্তত তোমার চিরসুখ দেখে মনে হয় আমি না হলেও অন্য কেউ তো সুখে আছে। আমি না হয় সামান্য এই জীবনে বিরহের চাষাবাদে গড়ে তুলবো নিঃসঙ্গতার খামার।

ইতি,
রোদ্দুর

৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

No comments:

Post a Comment