Tuesday 3 October 2017

ব্যস্ত দিনের কচড়া

ব্যস্ত দিনের কচড়া
ইমেল নাঈম

সকাল ৭:৩০

চোখ খুলে দেখি সুন্দর সকাল কড়া নাড়ে জানলায়। শহুরে আকাশ এতোটা খোলামেলা নয়। জানলায় চোখ রাখলে সবুজ নেই। ইট পাথরের সভ্যতা আঁকছে দিনের ব্যস্ততা। মুঠোফোনে নোটিফিকেশন চেকের মাঝে অপ্রয়োজনীয় হয়ে গেছে রুদ্ধদ্বার বিশ্বাস। দুটো পরোটা আর এক কাপ গরম চা, এরপর অফিসের গাড়ি। তারও আগে স্নানপর্ব। দম ফালানোর সময় নেই। নিজেকে রোবটিক্স মুডে রাঙাতে আপ্রাণ প্রচেষ্টা।

সকাল ১১.৪০:

সকালের শেষের দিক। কাজে ডুবে থাকার প্রয়াস। কাজের ফাঁকে চোখ আজও চলে যায় মুঠোফোনে। মুখবইতে অকারণ ঘোরাফেরা। আচমকা বসের টেলিফোন। ফাইল নিয়ে ছোটাছুটি। আসলে প্রযুক্তি কিনে নিয়েছে আমাদের ব্যস্ত সময়। মুহূর্ত বিলীন হয় এক পলকে। কাজের বিনিময়ে কিনতে চাই সাময়িক সুখ। নিঃসঙ্গতার ফাঁকগলে ব্যস্ত থাকার আয়োজন।

দুপুর ৩.৩০

ভাতঘুম চাপিয়ে আসে। এক কাপ রঙ চা খেয়ে ঘুম তাড়ানোর প্রচেষ্টা। সহকর্মীদের সাথে চলতে থাকে খুনসুটি। দিনের কাজ কতটা বাকি, কতটা হলো আর কতটা হয়নি তার জের টানতে টানতে এগিয়ে চলা।

সন্ধ্যা ৭:০০

কাজ গুছাও। বের হতে হবে শীঘ্রই। এমন অটোসাজেশনে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত। পয়মন্ত দিনের শুরুতে কোথাও ঘাটতি থেকে যায়। দিনের শেষেও ঘাটতি থাকে। মধ্যবিত্ত মন বারবার উঁকিঝুঁকি দেয়। নিজের ভিতরের হতাশা জানান দেয়। অপ্রাপ্তিদের উড়িয়ে দিই বিষাদের ধোঁয়ায়। হেডফোন কানে গুজে ছুটে চলি, গন্তব্য নিজের আপন নিবাস।

রাত ৯.৩০

বিছানায় শুয়ে আঁকছি অখণ্ড অবসর। মুঠোফোনে কোনো শব্দ নেই। ইমেল'র ডায়রির পাতা বাড়ছে অভিমানে। বুক সেলফ থেকে উঁকি দিচ্ছেন কাহলিল, ওরহান পামুক। ম্যাসেঞ্জার জুড়ে প্রিয় মানুষের আনাগোনা। 

রাত ১১.৩০:

শুয়ে যাবার আয়োজন। তাতে লেখা হয় একটা নিষ্প্রাণ দিনের সমাপ্তি। সাদামাটা দিনের মাঝে কিছু কিছু আঁচড় থাকে রঙিন। সেগুলো গোপনেই থাকে প্রেমিকার চুমুর মতো।

প্রকাশকালঃ ১৮ আশ্বিন ১৪২৪

No comments:

Post a Comment