Wednesday 19 April 2017

নিষ্প্রাণ শহর

নিষ্প্রাণ শহর
ইমেল নাঈম

অল্পতেই বিরক্ত হয়ে ফিরছি। পান হতে চুন খসতেই বেরিয়ে আসছে গালি। উদ্দেশ্যহীন সময়ের কাছে ফিরে যাবার মন্ত্র জানা নেই। ইশকুল ঘর পেরিয়ে গেলে বিশাল মাঠ, কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের উঁচু দালান কোঠার ভিড়ে লেখা হয় ত্রিমাত্রিক শব্দবিন্যাস।

ছবির ভিড়ে লুপ্ত জীবনের আয়োজন। কতটা রুক্ষতা আঁকা যায় পৃথিবীতে? এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই, তাই প্রশ্ন করতে ভুলে গেছে সবাই। আয়নায় মুখ দেখিনা, অন্য কাউকেও দেখিনি ঠিক করে। নিজেকে প্রশ্ন করতে শিখি নি, মুখস্থ বিদ্যা ঝেড়ে দিলে নেমে আসে বিষণ্ণ সন্ধ্যা।

রাত্রিকালীন অবসরে কবিতার খাতায় লিখে রাখি অবসাদ। ক্লান্তি মুখর দিনে ঝরে গেছে অনেক ফুল। কালবৈশাখী বাতাস উড়ে আসে দূর থেকে। কুলফি বাতাসে কোনো স্বস্তি নেই, সেখান থেকে উড়ে আসে বার্তা। প্রাপকের ঠিকানা নেই, নেই কোনো আহাজারি। শোনা যায় নিঃসঙ্গতার গান —
          "শাওনও রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে,
           বাহিরে ঝড় বহে, নয়নে বারি ঝড়ে।"

খুব মনোযোগী হলে এ দুটি লাইন রূপান্তরিত হতে পারে প্রেমের সুতীব্র ব্যথায়। কর্পোরেট বিজ্ঞাপনের ভিড়ে কিছু মুখ ভুলে যাই, কাউকে মুছে ফেলি সময়ের ইরেজারে। মায়াজালে বাসা বাঁধছে একজোড়া বাবুই, তার নিচেই ঝরে পড়েছে পারিজাত। ঝড়ের শেষে যা আছে বাকি তাতে কোনো সুর নেই। বেসুরো গলায় গাইছে নগরীর কোনো ভণ্ড প্রেমিক।

সে মুখ বন্ধ করার মতো কোনো বুলবুলি'র অস্তিত্ব নেই শহরে। এভাবেই শহর নিষ্প্রাণ হয়ে উঠছে মাটির পেলবতা হারিয়ে।

প্রকাশকালঃ ০৬.০১.১৪২৪

No comments:

Post a Comment