Sunday 26 March 2017

মায়াডোর

মায়াডোর 
ইমেল নাঈম 


এক কবি তার প্রেমিকার কথা বলতে গিয়ে হারিয়ে ফেলেছিল কলম। কবিতাকে বাঁধতে চেয়েছিলো পলাশ রাঙা ভোরের মেঠোপথে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ফুলের সমারোহ, হাতে ছুঁয়ে থাকে অন্য এক অদৃশ্য হাত। মন্ত্রমুগ্ধের মতো শ্রোতা হিসেবে জন্ম নিয়েছে মফস্বলের ধুলোবালি। পরতে পরতে জমে গেছে বসন্তের আর্দ্রতা। আসলেই বড্ড কুক্ষণে প্রেম নিবেদন করতে গেলো, অসময়ের জয়জয়কার এখন। মুখোশের ভিড়ে প্রান্তিক মুখের বন্ধনকে হালকা করতে শিখেনি। আর অল্পতেই জন্ম নিচ্ছে বিষাদ। 

অসুস্থতাকে ছুটি দিয়ে হঠাৎ করে চেয়ে দেখি, কোনো কোনো সকাল অন্যরকম গল্প বলে। টঙ দোকানের তিনপেয়ে টুলে বসে লেবু চা আর তক্তা বিস্কুটের ফাঁকফোকরে কিছু আলসে গল্প লিখা হয়। হঠাৎ শোঁশোঁ করে চলে যাওয়া সি.এন.জির ধোঁয়া, আর তার পিছুপিছু একদল কিশোর দৌড়ে ফেরে। এরই মাঝে ইশকুলের ঘণ্টা শুরু, এক ঝাঁক প্রজাপতি উড়ে বেড়ায়, নতুন এক স্বপ্ন বুনতে। কবির চোখে মফস্বলের সবচেয়ে মনোহর দৃশ্য এটি। 

ভবঘুরে কবি, ডান বাম দেখে উঠে পড়ে টুল থেকে, এরপরের গন্তব্য কোথায় জানা নেই। শব্দের খোঁজে পেরিয়ে যাচ্ছে পথ ঘাট, ইটের সলিঙ। পিচ ঢালা পথ হারিয়ে যাচ্ছে শহরের দিকে। কবি দাঁড়িয়ে আছেন তিন রাস্তার মাথায়। ভরদুপুরের চওড়া রোদ, মাথা হঠাৎ ঝিম মেরে ওঠে, তার প্রান্তিক জীবনের গল্প বলা হয়নি এখনো। শোনাও হয়নি নানা বয়সের রূপান্তরের গল্প। তবুও কবির চোখে স্বপ্ন থাকে — সে কল্পনা করে নগরীর শেষপ্রান্তে কোনো কবি ঠিক এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে। 

বন্ধু তোমাকে বলি, কবিকে সামলে রেখো, আনন্দের হিল্লোলে তাকে ডেকো, বেদনায় মুষড়ে পড়লে বুকে আগলে রেখো। তাকে চোখেচোখে রেখো, স্বপ্নের বাঁধনে রাখো। স্বপ্নিল না হলে তাকে কোনো মায়াতেই আটকাতে পারবেনা। 


প্রকাশকালঃ ১২ চৈত্র, ১৪২৩। 

No comments:

Post a Comment