এটাকে ঠিক কবিতা বলা যায় না। প্রতিবাদও না। অধিকার আদায়ের কোনো বক্তব্য লিপিবদ্ধ নেই খাতায়। তবুও আপনার বিপরীতে দাঁড়িয়ে। একদম সন্মুখে চোখে চোখ রেখে শান্ত ভাষায়, দৃঢ় চিত্তে, নির্ভীক মননে কিছু কথা আপনার সামনে বিড়বিড় করতেই হয় আমাদের। শোনার মতো সময় নেই আপনার, আর হবেই বা কি করে, আপনার এখন কতো কাজ। পুরো একটা নিশান আপনার আঙুলে নাচে, উড়ে, ঘুরে, ফিরে।
অজস্র কথা চাপিয়ে দিয়েছেন আমাদের উপরে। স্বপ্ন দেখাচ্ছেন দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টা। কিন্তু ইঁদুর বিড়ালের খেলার মতোই খেলে যাচ্ছেন পুরোটা সময়। আপনার কথাগুলো ক্রমশ মিথ্যে প্রতিশ্রুতিতে পরিণত হচ্ছে। আর একের পর এক ঘটনা আপনাকে করে তুলছে প্রশ্নবিদ্ধ। পত্রিকার পাতা খুললে এখন ভেসে আসে দুর্ঘটনার সংবাদ। তালহীন ঘুড়িটিও আকাশের ঠিকানা পেলে নিজেকে রাজা মনে করে বসেন। আর ক্রমশ সুতোর সান্নিধ্যটুকুও ভুলে যান।
ভূমিকার বাইরে এসে কিছু কথা বলার থাকে। বলতে গেলে সাতান্ন এসে জগদ্দল পাথরের মতো আটকে ঘরে। ঘর থেকে বেরোই না, চুয়ান্ন শব্দটা খুব পরিচিত। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করায় আপনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা। যদিও আপনার আত্মীয়স্বজন অনেকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ঘুরে ফিরে আসে বারবার। আপনি তাদের বিপক্ষে সবসময় মিস্টেরিয়াস নীরবতা পালন করেন। আমি চিমটি কেটে পরীক্ষা করি চেতনার থার্মোমিটার।
পেপার খুলেই চমকে উঠলাম। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অনেক চিহ্নিত রাজাকার, অমুক্তিযোদ্ধারাও এখনো পেয়ে যাচ্ছেন ভাতা। এরচেয়ে বেশি কিছু বলার নেই। আমি শালা মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। সবসময় বেঁচে থাকার লড়াইয়ে মেতে থাকি। আমার কপাল অনেক ভালো, অন্য দশজন ছেলের মতো চাকরি নামের সোনার হরিণের খোঁজে ব্যস্ত থাকতেও পারতাম। আমিও তো ম্যানহোলে পড়ে নেই হয়ে যেতেও পারতাম, হয়ে যেতে পারতাম গুম, মধ্যরাতে লাশ পাওয়া যেতো কোনো ঝোপঝাড়ে। কিংবা চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে মরেও যেতে পারতাম।
এইযে আমার বেঁচে থাকা, মধ্যবিত্ত মানসিকতার লড়াই...এটা নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই আগামীর পথ।
No comments:
Post a Comment