Thursday 3 December 2015

অন্ধকার ২

চলো শান্তির পায়রা উড়াই। সাদা পায়রা ওড়ানোর পরেই আয়োজন করি মোমবাতি জ্বালিয়ে এক মিনিটের নীরবতা পালনের উৎসবের। এরপর রবীন্দ্র সঙ্গীত গাই সকল অপচেতনা দূরীভূত করার প্রয়াস। আসো এই মৃত্যু উল্লাসে কবিতা লিখি। কবিতা লিখি প্রতিটি বোমার বিপরীতে। জীবনের স্বাদ আস্বাদনের নিমিত্তে কবিতা লিখি। আগেও বলেছিলাম, বস্তুবাদের জগতে কবিতার কোনো শক্তি নেই। যদিও মধ্য পৃথিবীর প্রিয় সহযাত্রী একই অভিযোগে মৃত্যুর পথে এগিয়ে যাচ্ছে। কবিতার লিখার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড। আমরা কবিতা পড়ছি এরপর।

কতগুলো বোমার আঘাতে একটা মানচিত্র ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। হিসাব কষে ফেলে লাভ ক্ষতির মুনাফা। প্রাকৃতিক সম্পদের লুটপাট করলেই ঠাণ্ডা হয়ে যাবে ভূখণ্ড। এখানে শান্তির জন্য কবিতা নয়, বোমারু বিমান বরাদ্দ করেছে ঈশ্বর। অতঃপর আঘাতের পর আঘাতে ঝাঁঝরা করে দাও সব সমান্তরাল জায়গা। বোকাবাক্সে প্রচারিত করো নিজেদের ক্ষমতা। ক্ষমতায়নের এই দুঃসময়ে নিজেকে প্রচার করার জন্যই এই প্রেসকিপশনেই বিশ্বাস তোমার। ও'দিকে সন্ত্রাসী মরে, বয়স ওদের কতই আর বারো...চৌদ্দ...ষোল...সন্ত্রাসের আস্তানা উড়ে যাওয়ার পর জানা যায়, ওটাকে ইশকুল নামেই চিনতো সবাই।

ওখানের মানুষ সকাল দেখে না। মসজিদে যায় না, অফিসে যায় না, হাটবাজারেও যায় না। শুধু পালিয়ে বাঁচতে চায় অন্য কোনো সীমান্তে। তাদের জন্য দাঁড়িয়ে থাকে কয়েক প্লাটুন পুলিশ। শিশুর মৃতদেহ মিলে যায় সমুদ্র সৈকতে। আমরা শান্তির জন্য মসজিদে যাই, গির্জায় ধর্না দিই, মন্দিরে যাই। আর তারা বোমা মারে, নিরপরাধ মানুষ মারে, অথচ সন্ত্রাসী নয় একদমই।

চলো আমরা কবিতা লিখি, মোমবাতি জ্বালাই। মৃতদেহের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করি। এটাই অক্ষম লোকের একমাত্র ক্ষমতা। আমরা নৈতিকতার কারণে শান্তির কামনায় দাঁড়িয়ে থাকি ভুল সময়ে, ভুল দরজায়।

No comments:

Post a Comment