Monday 7 December 2015

রাত এবং সকালের উপলব্ধি

আঙুল ছুঁয়ে থাকে আঙুলের গল্প। মৃত্যু ছুঁয়ে থাকে ইতিহাস। আটকে গেছে জগদ্দল পাথরে স্বপ্ন গাঁথা। নিজের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়াদির আড়ালে অনেক দুঃখ লুকিয়ে। ব্যস্ততার ফাঁক গলে এখন সময়ের জোয়ার ভাটায় ভেসে আসে পরিযায়ী সময়েরা। রাত বাড়ে টিক টিক শব্দে। ডিজিটাল ঘড়ির ঘণ্টা কালীন এলার্ম। জেগে থাকা একটা রাতের গল্প। অভিমানী কথারা পায়চারি করে সারাটা লন জুড়ে। জানালা খুলে দিলেই দেখি নিয়ন জ্বলে পোস্টের চূড়ায়। সেই আলোতে আবছায়া একটা খেলার মাঠ। সেও আমার মতো রাত পাহারায়, চারপাশের ব্যস্ততা নেই। শুধু পায়চারি করা ছাড়া।

খাবার ঘরে একটা ডিম লাইট জ্বলছে। লাইট টা কেনো জ্বলে জানি না, তবে আমি অন্ধকার ভয় পাই না। আলোকে এড়িয়ে চলতে বসে হারিয়ে ফেলেছি অনেক পাঠ। সকাল হলেই ছাদে যাবো। কতদিন ছাদে যাই না। একসময় প্রায় যেতাম। ভাল না লাগার যে সংবেদ আমার চেয়েও বেশি জানে না কেউ। ক্রমশ নিজের ভিতরের সত্ত্বাটা প্রশ্ন করে চলেছে অর্বাচীন সুখে। তার প্রশ্নবাণে ক্ষতবিক্ষত হই, রক্তাক্ত হই। তবুও জল নেই চোখে। মেনে নেয়ার তীব্র আনন্দ সুখ তাড়িয়ে মারে নীরবে। আমি বারবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। পা ফসকে যায়, ব্যথায় কুঁকড়ে উঠি। আবার দৌড়ে বিছানায় ফিরি।

সকালের বিছানা ছেড়ে উঠি। প্রাতঃস্নানে আয়নার নিজের প্রতিচ্ছবি দেখি। অচেনা একটা মানুষ সারাটা রাত পায়চারি করে কাটিয়ে দিয়েছে নিজের সাথে আনমনে এক ভাবনায়। প্রতি রাতেই নিজের ভিতরের অন্য আমি'কে আবিষ্কার করতে এখন আর ক্লান্ত লাগে না। বরং নিজেকে যুদ্ধ শেষে ক্ষতবিক্ষত এক অতিসাধারণ সৈনিক মনে হয়। যে সর্বস্বান্ত হয়ে ফিরেছে নিজের ঘরে। 

No comments:

Post a Comment