Sunday 7 August 2016

পাখিদের বন্ধু দিবস

পাখিদের কোনো বন্ধু দিবস নেই। তারা ব্রহ্মচারী, হয়তো আরব্য বেদুইনের মতো বোহেমিয়ান স্রোতে ভেসে যায় অচেনা পথে। আবার ফিরেও আসে। মরূর বুকের লু হাওয়া শান্ত করে দেয় ধুলোঝড়। পথ কে অচেনা করেছে যে মোহ, তাকে অবেলায় শুনিয়ে দাও ঘুম পাড়ানো গান। বেশি দূরের পথে উড়ে যেতে নেই। পথ হারিয়ে ফেলে কাঙাল পাখি। নিজের পথ ভোলে না কেউ কখনো। কিছুটা ঋণ থেকে যায় ভৌগোলিক হিসেব নিকেশে।

রাত্রিপ্রহরে শীতলতা আর আর্দ্রতাহীন জলবায়ু হাঁপিয়ে দিয়ে যায় নাগরিক প্রাণ। সান্ধ্যকালীন চায়ের কাপে তুমুল আড্ডায় কোনো বন্ধুর জীবনে প্রেম নামে অবেলায়, আর বাকিদের টিপ্পনী সুরকে অবহেলায় উড়িয়ে দিতে দিতে কোনো এক পাখি গেয়ে চলেছে প্রেমের গান। পৃথিবীর মধ্যভাগে ঝিঁঝিঁর ডাকাডাকি নেই, পূর্বের দখলে নিয়েছে তারা। মানুষের জীবন বড্ড অদ্ভুত। তারা মুখোশের আড়ালে বন্ধুত্ব পাতে। অলক্ষ্যে এক ঘা বসিয়ে দেয়। ঘড়ির পেণ্ডুলামের মতো দোদুল্যমান সত্তা নিয়ে তারা পালন করে বন্ধুত্বের আয়োজন।

পাখিদের বুকে কোনো যতিচিহ্ন নেই, তারা সামনে আগাতে শিখেছে, ইন্দ্রিয় দিয়ে বুঝতে শিখেছে জীবনের আনন্দপাঠ। সৃষ্টিসুখ তাদের নেই, প্রকৃতির সুর তাদের মোহিত করে রাখে। আমরা থেমে যাই, তারা থামে না। আনন্দের সুখে আমরা ধ্বংস করি অন্যের বাগান। নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব গাইতে বসে কৌলীন্য বরণ করে নিই। পাখিদের কোনো বন্ধু দিবস নেই, মানুষের আছে। পাখিরা কাউকে শত্রু ভাবতে শিখে নি, মানুষ নিজেকে পাখির বন্ধু ভাবতে বসে কারাগারে আটক করছে, সৃষ্টির আনন্দ আর নিজের বিলাসিতায় ধ্বংস করছে নিজের বন্ধুদের।

পাখিরা যাযাবর, তারা উষ্ণতা খুঁজতে ফিরবে কোনো শীতকালীন সকালে।

No comments:

Post a Comment