Tuesday 16 August 2016

রাত বিভুঁই
- মধুবন্তী মিত্র দাশগুপ্ত

চাঁদের পাশে একটা বাড়ি। সেই বাড়ির দেওয়ালে কোন এক লিখন। সেসব পড়া যায় না। বাড়ির চারপাশে নীল পাহাড়। পাহাড়ের ঢাল নেমে এসেছে টলটলে জলে। তার কিনারে মেঘের মত চুল নিয়ে জলপরীরা জ্যোৎস্নার সুরে গান বাঁধে। তোমার চোখ নেশাতুর। তোমার মাথায় হালকা চলন। তোমার শরীর জুড়ে দুলুনি। শীত এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে তোমার রাতগুলোকে।

ধোঁয়ার মত তোমায় ঘিরে ধরছে বিভুঁই। পাহাড়ী গান ভেসে আসছে। অদূরেই পায়ে চলা পথ। গাড়ী পথ। ধূসর বেদনার ছাপ তোমার চোখে নিসর্গ এঁকে দেয়। তোমার ফোনে কোহেন বাজে। কিংবা বব ডিলান। তারা স্বপ্নের মত এই উপত্যকায় তোমায় প্রেম দিয়ে যান মুচকি হেসে।

দোকানপাট আছে কিছু। চায়ের ঘন ধোঁয়া, আদার ঝাঁঝ আর দুধের মিষ্টি গন্ধ লাগছে নাকে। তোমার চোখ আরো নেশাতুর হয়ে ওঠে। গেলাসে পড়তে থাকা ঘন সোনালীর ভেতর তুমি 'দু-দন্ড শান্তি' খুঁজতে থাক। তোমার কোন বনলতা সেন নেই।

ধরা যাক, কোন এক লক্ষ্মীপেঁচার চিৎকারে তোমার চোখ চলে গেল চাঁদের দিকে। ধরা যাক, 'এখানে মেঘ গাভীর মত চড়ে'। ধরা যাক, এই সময় তোমার হাত দুটো কম্বল খুঁজছে ক্লান্তি লুকোবে বলে।

তোমার পৃথিবী এই আবার শুরু হল। তোমার গল্পকার নিসর্গ লিখে দিলেন রাতের নামে। শান্তি নেমে এল। স্বর্গ নেমে এল। কাল আবার ভোর হবে। সোনালী রঙে তোমার চোখ ধুয়ে যাবে। নেশা কেটে গিয়ে উঠে বসবে তুমি। কাল রাতের পাহাড়ী রহস্য মনে পড়বে তোমার। আর হয়তো ঘুমের গোপনে দুটো লাল, ফোলা চোখ। তোমার ফেরার পথ চেয়ে কত রাত ঘুমায়না তারা।

No comments:

Post a Comment