আহ্বান
— ইমেল নাঈম
পশ্চিমের অস্তরাগ
মুছে যায়। মন খারাপগুলোকে বিষণ্ণ দিনের খামে ভরে পাঠিয়ে দিই। শান্তি খুঁজতে বসে হারিয়ে
ফেলেছি অনেক সন্ধ্যা। পাখির কলতান থামে, সেইসাথে থামে আলোকচ্ছটা। পত্রিকার পাতাজুড়ে
ঝরছে রক্ত। খুনি আমি। মৃত শরীর সেও তো আমার। নিজেকে নিজেই হত্যা করছি। পৃথিবীজুড়ে সঙ্গীত
আর নৃত্তের অপূর্ব সমন্বয়। মানুষের চলাচল থেকে নদীর কূলকুল বয়ে চলা তার সবটাতেই লুকোনো
সুর। ঘাসফড়িঙয়ের ওড়াওড়ি থেকে অন্যকোনো প্রাণের হাঁটাচলা তার পিছনেও লুকোনো তাল, লয়
আর ছন্দ।
তবে, কেনো
ঝরাও রক্তপাত। সেখানে কোনো সঙ্গীত নেই, প্রান্তিক শব্দের কাছে জড়তা অনেক। রক্ত কী তোমার
ঝরছে না। যেখানে মরছে, সেখানেও তো আছো তুমি। পার্থক্য একটাই — মৃত শরীর নিয়ে ঘুরে ফিরছো
পৃথিবীজুড়ে। অপরপক্ষে সে তো অমর, সেও তো ঘুরছে পৃথিবীজুড়ে। তার জন্য ফুলেরা নিশ্চুপ।
প্রজাপতিদের নীরবতা প্রমাণ করে সেও মৃত তোমার মতো।
পৃথিবী প্রেমের।
সেখানে কেনইবা চাষাবাদ হয় অন্যকিছুর। শান্তির বিনিময়ে গোলাপ নয়, বারুদ দিতে ভালবাসে
পৃথিবী। শান্তি আনয়নের উত্তম পন্থা আবিষ্কার করেছে। ফুলের বাগানের পরিবর্তে ফুলের ফ্যাক্টরি।
প্রগতি দিয়েছে দাঁত আর নখের অহংকার। সবুজকে হত্যা করছি কালো ধোঁয়ার নিঃসরণে। তার নাম
দিয়েছি সভ্যতা। মানুষ পরিণত হচ্ছে যন্ত্রে।
অবসাদে আক্রান্ত
পৃথিবী। তার প্রতি পরতে পরতে জমেছে বেনামা ঋণ। সঙ্গীতের আহ্বান থেমে যেতে থাকে। ছিন্নভিন্ন
পড়ে থাকে অনেক নিথর দেহ। কারণ খুঁজতে চাইলে বেরোতে পারে অজস্র অংক। সমস্যার গোঁড়া থেকে
সরে যাচ্ছি প্রতিবারই। চাইছি, শিকড় থেকে উপড়ে ফেলা হোক টাকাবৃক্ষের, অস্ত্রের কারখানায়
গড়ে উঠুক ফুলের বাগান।
প্রকাশকালঃ
১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৪
No comments:
Post a Comment